মঙ্গলবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সিপিজের চিঠি

কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সিপিজের চিঠি
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস সামনে রেখে বাংলাদেশে কারাবন্দী চার সাংবাদিককে মুক্তি দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

সংস্থাটি বলেছে, ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো 'প্রতিহিংসামূলক' এবং এর স্বপক্ষে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের অভাব রয়েছে।

গতকাল সোমবার এক চিঠিতে নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠনটি 'জরুরি পদক্ষেপ' নিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি এই আহ্বান জানায়। 

চিঠিতে উল্লেখ করা চার সাংবাদিক হলেন—ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত।

সিপিজে বলেছে, এই চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনা হত্যা মামলার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই। তাদের সাংবাদিকতা ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার জেরে 'প্রতিহিংসাবশত' এসব মামলা করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

কারাবন্দী সাংবাদিকদের পরিবারের বরাত দিয়ে সিপিজে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের মানবেতর পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, তাদেরকে ৩৬ বর্গফুটের সেলে রাখা হয়েছে। সেখানে দরজার বদলে লোহার শিক থাকায় তারা শীত ও মশার উপদ্রবের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কংক্রিটের মেঝেতে কোনো তোশক ছাড়াই তাদের ঘুমাতে হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাবার ও চিকিৎসাসেবা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের নভেম্বরে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস স্বীকার করেছিলেন যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে হত্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে এবং সরকার তা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সিপিজে বলছে, 'গত বছরের আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর এই চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নতুন করে হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং বারবার তাদের জামিন আবেদন নাকচ করা হয়েছে।'

চিঠিতে ওই সাংবাদিকদের আইনজীবী জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে সম্প্রতি হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সিপিজে লিখেছে, 'বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ এবং ইন্টারন্যাশনাল কভেনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস-এ (আইসিসিপিআর) বাক্‌ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রয়েছে।'

আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে কারাবন্দী সব সাংবাদিককে মুক্তি দিয়ে পরিবারের কাছে ফেরার এবং কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে।

সিপিজে আরও জানায়, চলতি বছর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্সে ১০০টির বেশি দেশের দেড় হাজারের বেশি সাংবাদিক সিপিজের এই আহ্বানের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন।

চিঠির শেষে বলা হয়, 'এই বিষয়ে আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ মানবিক শাসন, ন্যায়বিচার ও মুক্ত আলোচনার প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারকে তুলে ধরবে।'

সর্বশেষ

জনপ্রিয়