২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা শিবির নেতা

বগুড়ায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা আমিরুজ্জামান পিন্টুর বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ সহস্রাধিক নেতাকর্মী ও ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে যাওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ততা, শরিয়াভিত্তিক বিনিয়োগ এবং অধিক মুনাফার প্রলোভনে গড়ে তোলা হয় ‘রেইনবো মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি, ‘রেইনবো হোমস, ‘রেইনবো কৃষি উন্নয়ন সংস্থা’ ও ‘রেইনবো হাসপাতাল’-সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান। এই সব প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে আমিরুজ্জামান পিন্টু দীর্ঘদিন ধরে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগীরা জানান, শরিয়াভিত্তিক বিনিয়োগের নামে পিন্টু প্রথমে কিছু মুনাফা দিলেও ২০২৪ সাল থেকে আর কোনও টাকা ফেরত দেননি। প্রতিশ্রুত তারিখগুলো পার হয়ে যাওয়ার পরও বারবার ঘুরিয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক মো. ফজলুর রহমান জানান, তিনি পিন্টুর সাবেক ছাত্র হওয়ায় বিশ্বাস করে প্রথমে চার লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। পরে ২০২৩ সালে এককালীন ৫০ লাখসহ মোট ৯০ লাখ টাকা পিন্টুর প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন। এর মধ্যে মাত্র সাত লাখ টাকা ফেরত পেলেও ৮৩ লাখ টাকা এখনো পাওনা রয়ে গেছে।
বগুড়ার নারুলী এলাকার প্রবাসফেরত মো. ফয়সাল মন্ডল, ববি সহ একাধিক ভুক্তভোগী জানান, পাঁচ বছর আগে থেকে বিভিন্ন সময় ১৫-৪০ লাখ টাকা করে বিনিয়োগ করেন তারা। কেউ কেউ মাসিক ৬০ হাজার টাকা মুনাফার আশ্বাসে টাকাও দিয়েছিলেন। বর্তমানে কারো মুনাফা মিলছে না, আবার কেউ মূলধন ফেরত পাচ্ছেন না।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান আমিরুজ্জামান পিন্টু ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হামিদুল হক তোতা মিলে পাঁচ হাজারের বেশি বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ২০০ কোটিরও বেশি টাকা সংগ্রহ করেন। চলতি বছর ২ জুন তারিখে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে শেষ পর্যন্ত গা-ঢাকা দেন পিন্টু।
ভুক্তভোগীরা জানান, থানায় এবং র্যাব কার্যালয়ে গিয়েও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ পাননি। বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির জানান, বিষয়টি শুনে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া শহর জামায়াতে ইসলামীর আমির আবিদুর রহমান সেহেল বলেন, "আমিরুজ্জামান পিন্টুর সঙ্গে বর্তমানে জামায়াতের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি ৯০-এর দশকে শিবিরে ছিলেন, এরপর রাজনীতির সঙ্গে আর সম্পৃক্ত ছিলেন না। দলীয়ভাবে বহুবার বলা হয়েছে, এ ধরনের সমিতি বা এনজিও থেকে দূরে থাকতে।"