ওসিকে অপসারণের দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ স্থানীয়দের

দায়িত্বে অবহেলা, চাঁদাবাজ, চোর চক্র ও ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অপসারণের দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৫টায় মোহাম্মদপুর থানার সামনে ঐক্যবদ্ধ মোহাম্মদপুর ব্যানারে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ হাসান সুমন বলেন, মোহাম্মদপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের সঙ্গে অসদাচরণ, আইনি সহায়তা না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ থাকার পরও তাকে অপসারণ করা হচ্ছে না। তিনি মোহাম্মদপুরের মতো একটা ক্রাইম জোনে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আঁতাত করে চলেন। যার ফলে আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি হচ্ছে। এত অভিযোগ, এত অসদাচরণের পরও তাকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার অপসারণ না করায় আমরা ভীত সন্ত্রস্ত। আমরা যারা ওসির এসব অসদাচরণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি তখনই আমাদের কারো না কারো বিরুদ্ধে ওসি ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পর সেটার কি তদন্ত হয় তা একমাত্র পুলিশ প্রশাসনই জানে। আমরা এ ওসির দ্রুত অপসারণ চাই। তাহলে মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
আরেক বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত ওসির এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করে আসছি। তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকার পরও পুলিশ হেডকোয়ার্টার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাকে এ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বাসিন্দারা থানায় সেবা নিতে এসে নানাভাবে অসদাচরণের শিকার হচ্ছে। এগুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশ হেডকোয়ার্টার, ডিএমপি কমিশনারসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা হতাশ। আমরা চাই ওসির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাকে প্রত্যাহার করবে সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা মোড়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা আইনি সহায়তা ও ওসির অসদাচরণ এবং পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন আহমাদ ওয়াদুদ নামের এক সাংবাদিক।
ওই পোস্ট ছড়িয়ে পড়লে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানার চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন– এসআই জসিম উদ্দিন, এএসআই আনারুল এবং পুলিশ সদস্য মাজেদুর রহমান ও মো. নুরুন্নবী।
এ ছাড়া এ ঘটনায় তিনজন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ডিএমপি জানিয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন– ইউসুফ (২৬), সিয়াম (২৩) ও জহুরুল (২২)।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, পানি সবসময় নিচের দিকে গড়ায়, একজন এসআই, একজন এএসআই ও দুইজন কনস্টেবল ক্লোজ হলেও ওসি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তারা চারজন এ কারণে কেন শাস্তি পাবেন, ওসি ক্লোজ হওয়া দরকার কিন্তু ক্লোজ হলো না। তার হয়ত বড় কোনো খুঁটির জোর আছে। এজন্য তার বদলি বা প্রত্যাহার হয় না।