শনিবার ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২

সংবাদ পরিক্রমা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ১০ অক্টোবর ২০২৫

হঠাৎ আ. লীগের জন্য আমেরিকার মায়াকান্না কেন : রনি

হঠাৎ আ. লীগের জন্য আমেরিকার মায়াকান্না কেন : রনি
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি প্রশ্ন তুলেছেন, আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকা হঠাৎ কেন মায়াকান্না করছে। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশের প্রায় সবাই জানেন যে আওয়ামী লীগের পতনের পেছনে আমেরিকার হাত ছিল। এটিকে কেউ 'ডিপ স্টেট পলিসি', কেউ 'ডোনাল্ড লু, পিটার হাসের কারসাজি', কেউ 'মৃদু সেনা অভ্যুত্থান' এবং অনেকে 'সেনাবাহিনী, জনতা, ছাত্র— সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা' বলছেন।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় রনি বলেন, "আওয়ামী লীগ পতনের পর দলের সবাই এটি কিভাবে হলো এবং এর সাথে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে, আমলাতন্ত্রে, মিলিটারিতে কারা জড়িত, তা মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছে। তারা রাজনীতিতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।"

তিনি আরও বলেন, "ইতিমধ্যে রাজনীতিতে নানা রকম শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেই শূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ভালো নির্বাচন এবং আমেরিকা যে স্বার্থগুলো চাচ্ছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নির্বাচনে আনার জন্য, রাজনীতির মূল ধারায় আনার জন্য গত তিন মাস ধরে নানা রকম চেষ্টা ও তদবির তারা চালিয়ে যাচ্ছে।"

রনির মতে, বাংলাদেশে বহু গোপন বৈঠক হচ্ছে। তিনি দৃশ্যমান কিছু অস্বাভাবিক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন, যেমন: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, সেনাপ্রধানের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ, বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি ও প্রধান নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের লন্ডন গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ। তিনি বলেন, "এই জিনিসগুলো রাজনীতির অস্বাভাবিক এবং এই অস্বাভাবিকতা তখনই ঘটে, যখন কেউ অস্বাভাবিক কিছু করতে চায়।"

তিনি আরও বলেন, "সেই অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোর মধ্যে যেটা হচ্ছে তা হলো, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিচার। ডিজিএফআইতে যারা ডিজি ছিলেন, নজিরবিহীনভাবে আওয়ামী লীগ জমানার প্রায় সব ডিজির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই বিচারপ্রক্রিয়া থেকে জেনারেলদের ইনডেমনিটি দেওয়ার জন্য সেনাপ্রধান সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বা করে চলেছেন। তবে আমি এটা জানি না; কিন্তু অহরহ আলোচনাগুলো হচ্ছে। কিন্তু মূলত যারা ডিজি হিসেবে ছিলেন সবাই আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন এবং তাদের বিচার হওয়া উচিত। দৃষ্টান্তমূলকভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত।"

রনি মনে করেন, "আমেরিকা প্রয়োজনে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে, এমনকি একদিন আগে যাদের জঙ্গি বলেছে, বা যাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তার স্ত্রী বা সন্তানের সঙ্গেও পরের দিন একই টেবিলে বসে খেতে পারে। ওদের কাছে এটা কোনো ব্যাপার নয়।"

তিনি আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ জানে যে অতীতে আমেরিকান পলিসি এবং ভারতের পলিসি অনুযায়ী শেখ হাসিনা কীভাবে বিরোধী দলকে হ্যান্ডল করেছে। এটা শেখ হাসিনা ভালো করে জানেন। যেমন— ২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে আইনগতভাবে শক্তিশালী করার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে একত্র করে নির্বাচনে যে আনা হলো, এটার পেছনে আমেরিকার একটা পলিসি ছিল।"

রনির দাবি, "আমেরিকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য আগামী সংসদে ৩০ জন, ৪০ জন, ৫০ জন এমপি পাঠিয়ে হই-হুল্লোড় করবে। আর মামলা-মোকদ্দমা একই সঙ্গে চলতে থাকবে। অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ছয়জন এমপি সংসদে পাঠিয়ে বিএনপির যে করুণ দশা হয়েছিল, ঠিক আওয়ামী লীগের জন্য ওই রকম একটা করুণ দশা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমেরিকা এই মুহূর্তে চেষ্টা চালাচ্ছে।"

জনপ্রিয়