বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা কারাগ

মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শহরের ঢাকা রোডব্রিজ এলাকায় গুলিতে নিহত জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ হোসেনকে হত্যার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা আজীম আহম্মেদ নামে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মঙ্গলবার (১৩ মে) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার (১২ মে) দিবাগত রাত ১২টার পর ঢাকার কাফরুল থানার কাজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আজীম আহম্মেদ পৌরসভার বরুনাতৈল গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা শাখার উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। মেহেদী হাসান রাব্বী ও ফরহাদ হোসেন হত্যা মামলার ৭ নম্বর আসামি আজীম আহম্মেদ। পুলিশ তাকে এ দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের ঘটনায় হওয়া আরও একটি মামলার আসামি হিসেবে নাম রয়েছে আজীমের।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে একই মামলার আসামি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব শিকদার এবং গত মার্চ মাসে আরেক আসামি যুবলীগ কর্মী হেদায়েত কোরাইশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাগুরা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী এহসানুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, আজীম আহম্মেদ নামের ওই আসামি মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত মেহেদী হাসান রাব্বী ও মো. ফরহাদ হোসেন হত্যা মামলার ৭ নম্বর আসামি। তিনি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান। গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ ঢাকার কাজীপাড়ায় একটি অনলাইন শপে নিজের পরিচয় লুকিয়ে চাকরি নেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতরাতে (সোমবার দিবাগত রাত) সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড পারনান্দুয়ালী ব্রিজের সামনে গুলিবিদ্ধ হন মেহেদী হাসান রাব্বী ও মো. ফরহাদ হোসেন।
ছাত্রদল নেতা রাব্বী নিহতের ঘটনায় ১৩ আগস্ট তার ভাই ইউনুস আলী বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে ফরহাদ হোসেনের নিহতের ঘটনায় তার পরিবার কোনো মামলা করেনি। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২১ আগস্ট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন সদর উপজেলার বিরপুর গ্রামের মো. জামাল হোসেন। ওই মামলায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীরেন শিকদারসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।