মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ৩০ মার্চ ২০২৪

৫ মাসে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে ৩৫ লাখ

৫ মাসে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে ৩৫ লাখ
৫ মাসে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে ৩৫ লাখ

বাংলাদেশে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেহেছে। বেড়েছে ব্রডব্যান্ড (আইএসপি ও পিএসটিএন) ব্যবহারকারী গ্রাহকদের সংখ্যা। গ্রাহকপর্যায়ে মুঠোফোন ইন্টারনেটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে খরচ বাঁচাতে সাধারণ মানুষ এখন ব্রডব্যান্ডে ঝুঁকছেন। সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী গত পাঁচ মাসে প্রায় ৩৫ লাখ মুঠোফোন ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা কমেগেছে বলে জানানো হয়েছে। 

বর্তমানে দেশে গ্রাহকপর্যায়ে মোবাইল ফোন ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে এই চারটি প্রতিষ্ঠান— গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক ও টেলিটক। বিটিআরসি চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ব্যবহারকারীর পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী— ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেশে মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের গ্রাহক ছিল ১১ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার। আর এই সংখ্যা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৬৩ লাখে।

সংস্থাটির প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০২৩ সালের আগস্টে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১১ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে গ্রাহক কমতে শুরু করে। সেপ্টেম্বরে ২০ হাজার গ্রাহক কমে ১১ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজারে নেমে যায়। অক্টোবরে এক লাফে ৩ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক কমে দাঁড়ায় ১১ কোটি ৯৪ লাখ ১০ হাজারে। নভেম্বর প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক কমে যায়। ওই মাসে গ্রাহক ছিল ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার। এরপর ডিসেম্বর তা কমে ১১ লাখ ৮৪ লাখ ৯০ হাজারে নেমে যায়। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা কমে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজারে নামে।

অন্যদিকে আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) ও পিএসটিএন (পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক) এর প্রতি ঝুঁকতে দেখা গেছে গ্রাহকদের। সেখানে ইন্টারনেট গ্রাহক উল্টো বেড়েছে। তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আইএসপি ও পিএসটিএন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার। অক্টোবর ও নভেম্বরে এ ইন্টারনেট সেবার গ্রাহকের সংখ্যায় হেরফের হয়নি। ডিসেম্বরে আইএসপি ও পিএসটিএন ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসেও একই গ্রাহক সংখ্যা বজায় রয়েছে।

এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ গ্রাহকরা জানান, বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে অতিরিক্ত দামের ইন্টারনেট গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেজন্য মোবাইলের ডাটা নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে বাসা-বাড়ি কিংবা অফিসের ওয়াইফাইয়ের উপরই ভরসা করছেন তারা।

টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিক্যাব) আহ্বায়ক মো. মুর্শিদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, উচ্চমূল্যের মুঠোফোন প্যাকেজ গ্রাহকদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। বর্তমানে গ্রাহকরা অপারেটরগুলো দ্বারা বহুমুখী পন্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে গ্রাহকদেরকে উচ্চমূল্যে নির্দিষ্ট মেয়াদের প্যাকেজ কিনতে হচ্ছে অন্যদিকে মাস শেষে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই প্যাকেজের অব্যবহৃত ডাটা ও টকটাইম ব্যবহারের সুযোগ থাকছে না। কারণ অপারেটর কোম্পানিগুলোর শর্ত হচ্ছে অব্যবহৃত ডাটা ও টকটাইম ব্যবহার করতে হলে এক মাস শেষ হওয়ার পূর্বে সেই একই প্যাকেজ পুনরায় চালু করতে হবে।

এভাবে একটি প্যাকেজের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধের পরও গ্রাহকদের তার পূর্ণ ব্যবহারের সুযোগ না দিয়ে অপারেটরগুলো অব্যবহৃত ডাটা ও টকটাইম একাধিকবার বিক্রি করছে। যা নৈতিকভাবেও সমর্থনযোগ্য নয় বলে মনে করেন টিক্যাব আহ্বায়ক।

আ/ম

জনপ্রিয়