বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

সংবাদ পরিক্রমা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০৬, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

এইচএসসিতে পাস ও জিপিএ-৫ কম কেন, ব্যাখ্যা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা

এইচএসসিতে পাস ও জিপিএ-৫ কম কেন, ব্যাখ্যা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি এবং মাদরাসা বোর্ডসহ মোট ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত বছর (২০২৪ সালে) এ হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

পাসের হার ও জিপিএ–৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া এ বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল অনেককে বিস্মিত করেছে। পাসের হার ও জিপিএ–৫ সংখ্যা কমেছে—এ প্রশ্নের উত্তর জটিল নয়, বরং সহজ কিন্তু অস্বস্তিকর: শেখার সংকট শুরু হয় বাংলাদেশের শিক্ষা জীবনের একদম প্রাথমিক স্তর থেকেই। বছরের পর বছর সেই ঘাটতি সঞ্চিত হয়েছে, কিন্তু আমরা তা স্বীকার করিনি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি যেখানে সংখ্যাই সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছিল—পাসের হারই ছিল সাফল্যের মানদণ্ড, আর জিপিএ–৫ ছিল তৃপ্তির মাপকাঠি। ফলাফল ‘ভালো’ দেখানোর প্রয়াসে আমরা শেখার প্রকৃত সংকটকে আড়াল করেছি। এখন সময় এসেছে সেই সংস্কৃতি বদলের। আমি চাই শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করুক—যে ফলাফল শিক্ষার্থীর শেখাকে সত্যিকারের মূল্যায়ন করে, সেটিই হোক আমাদের সাফল্যের মানদণ্ড।”

মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন,  “এসএসসি ফলাফল প্রকাশের পর যে উদ্বেগ উঠেছিল, তা আমি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেছি। সকল শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছি যেন ভবিষ্যৎ পরীক্ষায়—বিশেষ করে এইচএসসিতে—সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতি ন্যায্যতা বজায় রাখা হয়, কিন্তু ফলাফলের বাস্তবতা যেন বিকৃত না হয়। আমরা ‘অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি’ নয়, বরং ‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততা’কে বেছে নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত সহজ নয়, কিন্তু প্রয়োজনীয়।”

শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারি না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্ণধার হিসেবে আমার প্রথম দায়িত্ব হলো নিজেকে এবং আমাদের পুরো ব্যবস্থাকে মূল্যায়নের আওতায় আনা। এই ফলাফলকে আমি ব্যর্থতা নয়, বরং আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে দেখছি।”

তিনি জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে স্ব-মূল্যায়ন ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। 

“প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডকে তাদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার একটি স্বতন্ত্র পর্যালোচনা রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হচ্ছে, যারা ডেটা বিশ্লেষণ করে শেখার মূল ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করবেন। আমাদের উদ্দেশ্য অভিযোগ নয়, বরং সমাধান খোঁজা,”—বলেন সি আর আবরার।

জনপ্রিয়