সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২৫ মার্চ ২০২৪

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস
আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, কালরাত গণহত্যা দিবস। এই দিনটি জাতি স্মরণ করবে ১৯৭১ সালের কথা। ওই রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে যে গণহত্যায় মেতে উঠেছিল, তা শুধু এ দেশের নয়, সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে এক জঘন্য কালো অধ্যায়। বর্বরতার মর্মন্তুদ সেই কাহিনী সংক্ষেপে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সে রাতে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকার ফার্মগেটে মিছিলরত বাঙালিদের নির্বিচার হত্যার পর পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনাসহ বিভিন্ন এলাকায় একযোগে হামলা চালিয়ে অসংখ্য বাঙালিকে হত্যা করেছিল তারা।

২৫ মার্চের সেই গণহত্যার কথা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বই, ডকুমেন্টারি ও মিডিয়ায় প্রচারিত হলেও দীর্ঘ ৪৫ বছর দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।

পাকিস্তানী সামরিক আর রাজনৈতিক নেতৃত্বের যৌথ চক্রান্তের সিদ্ধান্তই ২৫ মার্চের অপারেশন সার্চলাইট। বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা না দিতেই চালানো হয় ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। ওই রাতে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতেই হত্যা করা হয় কমপক্ষে দশ হাজারের বেশি নিরীহ মানুষকে। পাশাপাশি দেশের বেশ কয়েকটি শহরে একযোগে চালানো হয় হত্যাযজ্ঞ।

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু আক্রমণ প্রতিহতের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান জানান। পাশাপাশি চালিয়ে যান আলোচনাও। কিন্তু পাকিস্তানীদের উদ্দেশ্য ছিল সময়ক্ষেপণ। পশ্চিম থেকে আনা হচ্ছিল সৈন্য আর গোলাবারুদ। আর ঢাকা পরিণত হয়েছিল বিক্ষোভের নগরীতে।

২৫ মার্চ সকালে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকের পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো সাংবাদিকদের জানান, ‘পরিস্থিতি সঙ্কটজনক’। পরে ইয়াহিয়া গোপনে বৈঠক করেন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে। চুড়ান্ত করা হয় হামলার নীল নকশা। শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারে সেনানিবাসগুলো সফর করেন। বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ও সৈন্যদের রাখা হয় নজরদারিতে। সন্ধ্যায় কোনো ঘোষণা না দিয়ে ঢাকা থেকে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া। রাত দশটায় শহরে ছড়িয়ে পড়ে হানাদার বাহিনী।

পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পুরান ঢাকায় একযোগে আক্রমণ করে হানাদার বাহিনী। মেতে ওঠে ইতিহাসের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে। ঢাকায় থাকা বিশ্ব গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তুলে ধরেন সেই বর্বর গণহত্যার কথা।

২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে দেশে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হত্যা, ধর্ষণের ভয়াবহতা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ।

আক্রমণকারী হানাদারদের একটি দল যায় ধানমন্ডি। গ্রেফতারের আগেই বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দেন স্বাধীনতার। নয় মাস যুদ্ধের পর মুক্তি লাভ করে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের নতুন একটি ভূখণ্ড; যার নাম, বাংলাদেশ।

জনপ্রিয়