ড. ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিষয়ক সচিবের বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ক সচিব এবং বাণিজ্য বোর্ডের সভাপতি জোনাথন রেনল্ডস বৈঠক করেছেন।
বুধবার (১১ জুন) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করা হয়। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য বৃদ্ধির কৌশল এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
জোনাথন রেনল্ডস বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া অপব্যবহারকৃত তহবিল পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টা, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে সংস্কার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীলকরণ এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজির সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ দূত সিদ্দিকী যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) শুরু করার প্রস্তাব দেন। তিনি জানান, ঢাকা ইতোমধ্যে জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এফটিএ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন এবং ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন এবং ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক।
গত ৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চার দিনের সফরে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরদিন মঙ্গলবার বাংলাদেশ দুপুর ১২টার দিকে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
১০ জুন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কমনওয়েলথের মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বোচওয়ে। সাক্ষাৎকালে বোচওয়ে বলেন, বাংলাদেশ যদি চায়, বিশেষ করে সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য, তাহলে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
বোচওয়ে আরও বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করা আগামী পাঁচ বছরের জন্য কমনওয়েলথের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সংগ্রামে সহায়তা করাও সংগঠনের অগ্রাধিকারভিত্তিক লক্ষ্য।
এছাড়া ১১ জুন সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্বখ্যাত ইউরোপীয় বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ভার্শ এবং ব্রিটিশ বিমানসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেনজিস এভিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়াইলি। তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ১৩ জুন সকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাক্ষাৎ করবেন।
এই সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।
সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।