বৃহস্পতিবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য কেনা হচ্ছে ৬০ গাড়ি

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য কেনা হচ্ছে ৬০ গাড়ি
সংগৃহীত

অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের জন্য মোট ২৮০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি মিতসুবিশি পাজেরো মডেল কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মন্ত্রীদের জন্য, ১৯৫টি জিপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) এবং ২৫টি মাইক্রোবাস জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য। প্রস্তাবিত মোট ব্যয় প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমান সরকারি পরিবহন পুলে নির্বাচিত কর্মকর্তাদের জন্য যথাযথ মানের গাড়ি নেই। বর্তমানে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কেনা গাড়ি ব্যবহার করছেন। এই গাড়িগুলো প্রায়ই মেরামত করতে হয়, যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। এ ছাড়া পুরোনো গাড়ি দিয়ে নির্বাচনি এলাকা সফর, উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন এবং অন্যান্য জরুরি দায়িত্ব পালন করা কঠিন।

গাড়ি সরাসরি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে ক্রয় করা হবে এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর এটি সম্পন্ন করবে। ক্রয় প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির অনুমোদনসাপেক্ষে গাড়িগুলো বিতরণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য কেনা ১৯৫টি জিপের প্রতি গাড়িতে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য ২৫টি মাইক্রোবাসের প্রতিটি দাম ৫২ লাখ টাকা। মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি পাজেরো গাড়ির দাম প্রতি গাড়িতে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে মোট ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে যানবাহন অধিদপ্তরের মোটরযান ক্রয় খাতে ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। গাড়ি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়ার সময় অর্থ বিভাগ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে। নতুন কেনা জিপগুলো প্রাধিকারভুক্ত হবে এবং জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের জন্য কেনা গাড়ি ব্যবহারের অনুমোদন বিআরটিএর পরিদর্শক দলের যাচাই সাপেক্ষে হবে। এ ছাড়া ক্রয়ে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ মেনে চলা বাধ্যতামূলক।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কোন গাড়ি ব্যবহার করবেন, তা কেন বর্তমান সরকার নির্ধারণ করছে? এটি অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নয়। এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত।

অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমান মন্ত্রীদের গাড়ি মেয়াদোত্তীর্ণ। তাই নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত ৮ জুলাই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে আগামী মন্ত্রিসভার সদস্যদের জন্য গাড়ি কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চলতি অর্থবছরে যানবাহন কেনার ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয় সংকোচনের পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। কিন্তু এবার ওই পরিপত্র উপেক্ষা করে গাড়ি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত বিষয়: