জমি মালিকদের বিক্ষোভ, নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ পুনর্বহালের দাবি

বৈষম্যমূলক বলে দাবি করা ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) ২০২২-২০৩৫ বাতিল এবং ‘ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮’ পুনর্বহালের দাবিতে রাজউক ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকার বিভিন্ন এলাকার জমির মালিকরা। মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল সোয়া ৯টা থেকে রাজধানীর রাজউকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়, যা চলে টানা চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
প্রতিবাদে জমি মালিকদের জোরালো উপস্থিতি
ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স এসোসিয়েশনের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে সহমত প্রকাশ করে উপস্থিত হন প্রকৌশলী, আইনজীবী ও অন্যান্য পেশাজীবীরা। তারা বলেন, বর্তমান ড্যাপ পরিকল্পনা ঢাকায় আবাসন নির্মাণে চরম বৈষম্য তৈরি করছে। পাশাপাশি, রাজউকের দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগও তোলেন তারা।
এ সময় রাজউক চেয়ারম্যান ও ড্যাপ প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলামের পদত্যাগ দাবি করা হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পরিকল্পনাবিদরা কিছু বিশেষ ভূমি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় সাধারণ মানুষের অধিকারকে উপেক্ষা করছেন।
৭ দিনের আল্টিমেটাম
ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. দেওয়ান এম. এ. সাজ্জাদ বলেন, “আমরা আজ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু আমাদের দাবি না মানলে রাজউকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই ঘেরাও ছিল সর্তকবার্তা, সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।”
ভূমি মালিক তানভীরুল ইসলাম বলেন, “জনস্বার্থবিরোধী এই ড্যাপ বাতিল না হলে আমরা রাজউকের সামনে আমরণ অনশন শুরু করবো।” আমিনুর রহমান, এজাজ খান, লিজা এবং রেজাউল ইসলামসহ অন্যান্য বক্তারাও বর্তমান ড্যাপের নানা অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন।
প্রধান দাবিসমূহ
বক্তারা বলেন, ড্যাপে বাড়ির উচ্চতা সীমাবদ্ধ করা, ফার কমিয়ে দেওয়া ও নতুন করে রাস্তাঘাটের প্রশস্ততার অযৌক্তিক শর্ত আরোপের ফলে জমি মালিকরা ভবন নির্মাণে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এতে করে রাজধানীর পাড়ামহল্লাগুলোতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা “পাশের বাড়ি ১০ তলা, আমার কেন ৫ তলা?”—এমন স্লোগানে মুখর ছিলেন। এছাড়াও তারা ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে:
- বৈষম্য ও অসঙ্গতিপূর্ণ ড্যাপ বাতিল
- জলাধার আইন ভঙ্গ করে প্রণীত ড্যাপ বাতিল
- কৃষিজমি ধ্বংসকারী ড্যাপ বাতিল
- ২০০৮ সালের নির্মাণ বিধিমালা পুনর্বহাল
- ভবনের উচ্চতা নির্ধারণে পুরনো নিয়মে ফিরে যাওয়া
- রাস্তার প্রশস্ততা সর্বনিম্ন ২০ ফুট নির্ধারণ
- নাগরিকদের আবাসন অধিকার নিশ্চিত করা