নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডার রাহাত এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে!

সাভারে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা একটি সন্ত্রাসী চক্রের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী হিসেবে উঠে এসেছে রকিবুল হাসান রাহাতের নাম। অভিযোগ রয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রমে জড়িত থাকা, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, ও অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্ত রয়েছেন তিনি।
রাহাত সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলেও দাবি রয়েছে। তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান “৫০ এভি রেস্তোরাঁ” উদ্বোধনেও ওই নেতার উপস্থিতি ছিল।
জুলাই আন্দোলনে সহিংসতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সাভারে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সময় যে হামলার ঘটনা ঘটে, সেখানে রাহাত ও তার ক্যাডারদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এ হামলায় সহায়তা করেছেন রাহাত।
চাঁদাবাজি ও সামাজিক শিষ্টাচার লঙ্ঘনের অভিযোগ
স্থানীয় হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী সমিতির ব্যানারে রাহাত নিয়মিত চাঁদা আদায়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের উদ্দেশ্যে অশোভন বার্তা, হয়রানি ও চরিত্রহননের মতো অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। এই বিষয়ে সাভারের এক নারী ভুক্তভোগী মিথিলা (ছদ্মনাম) জানান:
“আমি রাহাতের হাতে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি। ইতোমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতাও চাই।”
৫০ এভি রেস্তোরাঁ – ব্যবসা নাকি অসামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়াল?
সাভারে অবস্থিত “৫০ এভি রেস্তোরাঁ” নামে একটি হাই-প্রোফাইল খাবারের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন রাহাত, যা ইতিমধ্যেই নানা বিতর্কে জড়িয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, অতিমূল্য এবং নিম্নমানের খাবারের পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চলে বলে দাবি করা হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে রাহাতের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
রাজনৈতিক সংযোগ ও বিদেশে পলায়নের পরিকল্পনা
রাহাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর বিষয়টি। সামাজিক মাধ্যমে রাহাতের সাভারের বিতর্কিত সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ জং-এর সঙ্গে একাধিক ভিডিও রয়েছে, যেখানে তাকে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে রাহাত বলেন:
“এসব আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত। ৫০ এভি রেস্তোরাঁর মালিকানাও আমি ছেড়ে দিয়েছি।”
তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রেস্তোরাঁটির মালিকানা হস্তান্তর কাগজে-কলমে হলেও তিনি এখনো মূল নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রয়েছেন। সূত্র বলছে, রাহাত খুব শিগগিরই দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পরবর্তী পর্বে প্রকাশিত হবে:
আ.লীগ নেতাদের কালো টাকা পাচার চক্রের মূলহোতা রাহাত!