বুধবার ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

সংবাদ প‌রিক্রমা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ২২ অক্টোবর ২০২৫

মানবতাবিরোধী অপরাধ

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের গুমসহ পৃথক তিন মামলায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে টিএফআই ও জেআইসি সেলে সংঘটিত গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে এদিন কারাগারে পাঠানো হয়।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই তিন মামলায় সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা এবং সর্বমোট ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সেনা হেফাজতে থাকা ১৫ জনকে আজ আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে এদিন সকাল ৭টার কিছু পর বাংলাদেশ জেল প্রিজনভ্যানে করে ওই সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তারা সবাই সাধারণ পোশাকে ছিলেন।

মামলাগুলোর একটি আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত। অপরটি জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের।

গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা দুটি মামলার একটিতে মোট ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার হেফাজতে থাকা আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাব গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

এই মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক— বেনজীর আহমেদ (পরবর্তীতে আইজিপি), এম খুরশিদ হোসেন ও মো. হারুন-অর-রশিদ—যারা বর্তমানে পলাতক।

এ ছাড়া মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও র‍্যাবের সাবেক পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলামও পলাতক আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-নির্যাতনের অপর মামলায় শেখ হাসিনা, তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় সেনা হেফাজতে থাকা তিনজন ডিজিএফআই-এর সাবেক পরিচালক হলেন— মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ডিজিএফআই-এর সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক— লে. জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী এবং মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

তাদের মধ্যে অনেকের বর্তমান অবস্থান নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও, বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে তারা দেশত্যাগ করেছেন।

এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি করা হয়েছে বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. রেদোয়ানুল ইসলাম, মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমানকে।

উল্লেখ্য, এই মামলায় রেদোয়ানুল ও রাফাত সেনা হেফাজতে রয়েছেন, অন্য দুই আসামি পলাতক।

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: