সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ৭ জুলাই ২০২৫

প্রান্তিক খামারিদের সহায়তায় পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ১০ দাবি

প্রান্তিক খামারিদের সহায়তায় পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ১০ দাবি
সংগৃহীত

প্রান্তিক খামারিরা বেঁচে থাকলে, তাদের পাশে দাঁড়ালে দেশে ‘ঘরে ঘরে প্রোটিন’ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। তাই প্রান্তিকদের খামারিদের জন্য সরকারি সব ধরনের নীতিগত সহায়তা ও জামানতবিহীন স্বল্পসুদের ঋণ ব্যবস্থা করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

 

সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের দাবিগুলো হচ্ছে- জাতীয় পোল্ট্রি শুমারি ও ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা; সব ডিলার খামারি ব্যবসায়ীকে উদ্যোক্তা আইডি কার্ড দেওয়া; নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, প্রশিক্ষণ ও নীতিনির্ধারণী সরকারি মিটিং প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা; প্রান্তিকদের খামারিদের জন্য সরকারি সব ধরনের নীতিগত সহায়তা ও জামানতবিহীন স্বল্পসুদের ঋণ ব্যবস্থা করা; ফিড, ভ্যাকসিন ও ওষুধের দামে স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারিভাবে ফিডমিল ও হ্যাচারি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া; আধুনিক প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও ল্যাব সুবিধা সম্প্রসারণ এবং জেলা উপজেলায় কোল্ড স্টোরের ব্যবস্থা করা; স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ন্যায্যমূল্য ও বাজার সংযোগ নিশ্চিত করা; নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ডিম-মুরগি উৎপাদন ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করা; বাজার ধসসহ বিভিন্ন সংকটকালীন প্রতিকূলতায় সময় প্রান্তিক খামারিদের জন্য প্রণোদনা ও ভর্তুকি ব্যবস্থা করা এবং সুষ্ঠু কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নীতিমালা প্রণয়ন ও জাতীয় পোল্ট্রি উন্নয়ন ডেভলপমেন্ট বোর্ড গঠন করা।

 

সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, দুর্ভাগ্যবশত প্রতিদিন শত শত খামার বন্ধ হচ্ছে। গত ছয় মাসে অন্তত ১০ হাজার ক্ষুদ্র মাঝারি খামার বন্ধ হয়েছে। একটি খামার বন্ধ মানে শুধুমাত্র মুরগি বা ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়া নয়, বরং একটি পরিবার আয় হারাচ্ছে। একজন যুবক বেকার হয়ে যাচ্ছে, একটি সংসার ঋণের নিচে ডুবে যাচ্ছে। আমরা অনেক খামারিকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে দেখেছি। দেউলিয়া হয়ে গেছেন অনেকে। এই অবস্থা আর চলতে পারে না।

তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থায় এখন বৈষম্যের অবস্থা বিরাজ করছে। এখানে দুই ধরনের খামারি রয়েছে; একটি বড় প্রতিষ্ঠানের অধীনে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং খামার এবং অন্যটি স্বাধীন, প্রান্তিক খামার। যেখানে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং খামার নির্দিষ্ট মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারে, সেখানে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিনিয়ত বাজারের ওঠানামার সঙ্গে লড়াই করেন; কখনো লাভ, কখনো ক্ষতি। এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকা একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

বিপিএ সভাপতি বলেন, বাজারের ডিম মুরগির চাহিদার ১০ থেকে ২০ শতাংশ উৎপাদন করে কর্পোরেট কোম্পানি এবং তাদের কন্টাক্ট ফর্মিংয়ের মাধ্যমে। কোম্পানি ও কন্টাক্ট ফর্মিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন বন্ধ করুন প্রান্তিক খামারিদের ৯০ শতাংশ উৎপাদনকে ন্যায্য দাম দিয়ে তাদেরকে উৎপাদনে ধরে রাখুন। তা না হলে এক সময় সস্তার প্রোটিন ডিম ও মুরগি বড়লোকের পণ্য হয়ে যাবে। বাজারে কখনই স্বস্তি ফিরে আসবে না। কোম্পানির উৎপাদন ও কন্টাক্ট ফার্মিংয়ের নীতিমালা প্রকাশ করে তাদেরকে কঠোর নিয়ন্ত্রণের আওতায় নিন। প্রান্তিক খামারি ও ডিলারদেরকে টিকিয়ে রাখুন তা না হলে বাজার একচেটিয়া কর্পোরেট লেভেলে চলে যাবে তখন সরকার চাইলেও তাদের আর কিছু করতে পারবেন না। আর প্রান্তিক খামারিরা যখন উৎপাদনে থাকবে না তখন এই সংকট শুধু খামারিদের জন্য নয়, পুরো দেশের জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক মারুফিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক খামারিরা।

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ