রাজস্বভুক্তি চেয়ে ৪২ দিন ধরে আন্দোলনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের নারীরা

রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে টানা ৪২ দিন ধরে রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তথ্য আপা প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতায় সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত নারী তথ্যসেবা কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন এই প্রকল্পে বর্তমানে এক হাজার ৪৭৮ জন নারী তথ্যসেবা কর্মকর্তা এবং সহকারীসহ মোট এক হাজার ৯৬৮ জন জনবল কাজ করছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামের নারী, যারা দীর্ঘদিন ধরে তথ্যসেবা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করছেন। কিন্তু নানা আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এখনো তাদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এই নারী কর্মীরা।
তাদের দাবি— তথ্য আপা প্রকল্পের কর্মীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, কর্তনকৃত বেতন-ভাতা দ্রুত ফেরত দেওয়া এবং সরকারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা করে রাজস্বকরণের একটি নির্ধারিত রোডম্যাপ প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো গঠনমূলক সাড়া না পেয়ে তারা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছেন। অথচ অন্যান্য প্রকল্পের জনবল এরই মধ্যে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আজকের সমাবেশে আন্দোলন পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা তথ্য আপা কর্মীরা বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র নারীদের উন্নয়নের কথা বললেও বাস্তবে নারীকর্মীদের সঙ্গে অবিচার ও বৈষম্য করছে। তারা প্রশ্ন তোলেন— একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা অন্য প্রকল্পের কর্মীরা রাজস্বভুক্ত হলে, তথ্য আপা প্রকল্পের নারী কর্মীদের জন্য সে সুযোগ কেন থাকবে না?
সমাবেশ শেষে আন্দোলন পরিচালনা কমিটির সভাপতি সংগীতা সরকার বলেন, ৪২ দিন ধরে নারীরা রাস্তায় আছে, অথচ রাষ্ট্র নীরব। আমাদের জীবন, পরিবার, স্বাস্থ্য সবকিছু ঝুঁকির মুখে রেখে আমরা প্রশ্ন করছি— নারী উন্নয়ন কি শুধুই কথার ফুলঝুরি? তিনি বলেন, তথ্য আপা কর্মীদের পেছনে রয়েছে গ্রামের দরিদ্র নারীর সংগ্রাম, রয়েছে জনসেবার ব্রত। অথচ আমাদের আজ ঠাঁই হয়েছে রাজপথে, অফিসে নয়।
সংগীতা সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি আবারও কৌশলগত নীরবতা চালায়, তাহলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব। নারীকর্মীদের প্রতি বৈষম্য চলবে না, চলতে দেওয়া হবে না। তথ্য আপাদের আওয়াজ থামানো যাবে না। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।