একাত্তরের জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান বাংলাদেশের

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়াসহ দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যু সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
রবিবার (২৪ আগস্ট) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের চালানো গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া, সম্পদের বণ্টন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের শিকারদের জন্য আসা বৈদেশিক সাহায্য হস্তান্তর, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসনসহ দীর্ঘ অমীমাংসিত ঐতিহাসিক বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ স্থায়ী ও দূরদর্শী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপনের লক্ষ্যে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রে অব্যবহৃত সম্ভাবনা উন্মোচনের গুরুত্বের ওপর জোর দেয়। তারা এক্ষেত্রে নিয়মিত কূটনৈতিক ও খাতভিত্তিক যোগাযোগের গুরুত্ব স্বীকার করে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা একে অপরের পরিপূরককে সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগানোর জন্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি এক্ষেত্রে উভয় দেশের বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজিকরণ, সমুদ্র সংযোগ উন্নত করা ও বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে উভয়পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পাকিস্তান-বাংলাদেশ নলেজ করিডোর চালু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যার অধীনে আগামী পাঁচ বছরে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ৫০০ বৃত্তি দেওয়া হবে। এই বৃত্তির এক-চতুর্থাংশ চিকিৎসা ক্ষেত্রে দেওয়া হবে। তিনি জুলাই আন্দোলনের সময় আহত ৪০ জন শিক্ষার্থী ও ব্যক্তির অঙ্গ প্রতিস্থাপনসহ উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন। পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে হকি দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
বৈঠকে তারা আশা প্রকাশ করেন, শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়া এবং তার বাইরেও শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে। তারা পারস্পরিক স্বার্থ ও উদ্বেগের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের অব্যাহত সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছে।
উভয়পক্ষ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর চলমান গণহত্যা নৃশংসতা, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অনাহারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান শান্তি ও উন্নয়নের জন্য যৌথ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সার্ক, ওআইসি, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতা জোরদার করার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে।