সোমবার ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

প্রকাশিত: ১০:১০, ২৫ আগস্ট ২০২৫

দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করল ইউনিসেফ

দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করল ইউনিসেফ
সংগৃহীত

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ এবার অর্থ সংকটে পড়ার কারণে দেশে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। 


রবিবার (২৪ আগস্ট) ইউনিসেফের কক্সবাজার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে সংস্থাটির প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স জানান, কেজি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা এসব শিশু এখন আর স্কুলে যেতে পারছে না। 


তিনি বলেন, ৩০ বছরের কর্মজীবনে এত বড় অর্থ সংকট আমি দেখিনি। প্যালেস্টাইনসহ বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে আন্তর্জাতিক মনোযোগ ছুটে যাওয়ায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কমে গেছে।
ইউনিসেফের তথ্য মতে, এতদিন প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা শিশু শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার ৭৫ শতাংশই ইউনিসেফের আওতায় পড়াশোনা করতো। তবে তহবিল সংকটে শুধু প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা নয়, ইংরেজি শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশও বাদ দিতে হয়েছে। 
ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, এক হাজার ১৭৯ জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন, যদিও এখনও এক হাজার ৩৭০ জন বাংলাদেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন। অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা ৩ হাজার ৮৭৩ জন রোহিঙ্গা শিক্ষকের অনেকেরই বেতন বন্ধ রয়েছে।


চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন ও কিছু ভায়োলেন্ট বক্তব্যের কারণে চলমান প্রকল্পগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন রানা ফ্লাওয়ার্স।


ইউনিসেফ জানায়, বর্তমানে কক্সবাজারের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা শিশুর সংখ্যা ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ জন। প্রতিবছর এ শিবিরগুলোতে নতুন করে জন্ম নিচ্ছে আরও ৩০ হাজার শিশু।


এমন এক সময়ে যখন কক্সবাজারে শুরু হয়েছে “স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন” শীর্ষক তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন- যেখানে অন্যতম আলোচ্য বিষয় তহবিল সংকট, তখনই ইউনিসেফের এই ঘোষণা রোহিঙ্গা সংকটের নতুন বাস্তবতা স্পষ্ট করে দিল।

সম্পর্কিত বিষয়: