ঐকমত্যের পথে অগ্রগতি হলেও আপত্তি রয়েছে বিএনপির : জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থাগুলোতে নিয়োগের জন্য একটি স্থায়ী কমিটির গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে এই প্রস্তাবিত ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার নিয়োগ কমিটি’ (পূর্বে ন্যাশনাল কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল নামে পরিচিত) গঠনে এখনো বিএনপির আপত্তি রয়েছে।
রবিবার (২৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের সপ্তম দিনের প্রথম পর্ব শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. তাহের বলেন, শতভাগ একমত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়াটা প্রায় অসম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে এই জটিলতা কমানো যায়।
তিনি জানান, প্রস্তাবিত নিয়োগ কমিটি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং এর লক্ষ্য হলো নিরপেক্ষ, যোগ্য ও মেধাবী ব্যক্তিদের এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিশ্চিত করা।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার কোনো সংকোচন বা পরিবর্তন হবে না। এসব কমিটি কখনোই প্রধানমন্ত্রীর অধীন ছিল না এবং এক্সিকিউটিভের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাজ।
ডা. তাহের বলেন, আগে প্রতিটি কমিটির নিয়োগের জন্য আলাদা সার্চ কমিটি গঠন করা হতো, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের সুযোগ বেশি ছিল। নতুন প্রস্তাবিত স্থায়ী কমিটি এ সুযোগ কমাবে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ এটাকে ভুল বুঝে বলতে চাইছিলেন যে এরকম একটা কমিটি থাকলে প্রধানমন্ত্রীর হাত পা বেঁধে দেওয়া হবে। আসলে এর সাথে প্রধানমন্ত্রীর হাতও জড়িত নাই, পাও জড়িত নাই।
কমিটির প্রস্তাবিত কাঠামো তুলে ধরে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার (উচ্চ ও নিম্ন উভয়কক্ষের থাকলে), সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি (প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে) এবং রাষ্ট্রপতির একজন প্রতিনিধি এই কমিটির সদস্য থাকবেন।
ডা. তাহের বলেন, এখানে গভর্নমেন্টও আছে। গভর্নমেন্টের বিরোধী যারা তারাও আছে এবং দেশের আরও রেসপেক্টেড পার্সোনালিটিজ এখানে কম্বিনেশন আছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আপত্তি আছে। বিএনপি কনস কমিটি এরকম গঠন করুক, এটা তারা এগ্রি করছে না।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, অধিকাংশ দল অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এই প্রস্তাবে একমত হয়েছে। অধিকতর সংস্কার ও আলোচনার মাধ্যমে সব পক্ষকে ঐকমত্যে আনা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ও জনগণের প্রতিফলন
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ডা. তাহের বলেন, আমরা ইন প্রিন্সিপাল বাই ক্যামেরাল পার্লামেন্টের ব্যাপারে আমরা একমত আছি।
তিনি বলেন, উচ্চকক্ষের সদস্যরা শুধু এমপিদের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে জনগণের ভোটের প্রতিফলন থাকতে হবে।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, এখানে জনগণের ভোটের রিফ্লেকশন থাকতে হবে, সে হিসাবে প্রপোরশন যেটা হবে পিআর, যেটা আমরা বলেছিলাম এখানেও মোর দেন ২৩০ ইতোমধ্যে মতপ্রকাশ করেছেন পজিটিভলি।
ডা. তাহের মনে করেন, জাতির স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি এবং এর মাধ্যমে একটি ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ সম্ভব হবে, যা দেশকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে মুক্ত করে পরিবর্তন আনবে।