রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য জুলাই ঘোষণাপত্রের স্বীকৃতি চায় এনসিপি

সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে জুলাই ঘোষণাপত্রের স্বীকৃতি ও কার্যকারিতা চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১১তম অধিবেশনের শেষে এ প্রস্তাব দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন এসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে নতুন একটি সংবিধান প্রত্যাশা করি। এনসিপি মনে করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। নতুন সংবিধানের প্রস্তাবনায় জুলাই ঘোষণাপত্র সংযুক্ত করতে হবে। সেই জুলাই ঘোষণাপত্র রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির জায়গায় জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক স্বীকৃতি এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় রাষ্ট্রের জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে নিজেদের দেওয়া প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে আখতার হোসেন বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার যে বিধান রয়েছে, তাতে অবশ্যই সংশোধনী নিয়ে আসতে হবে।
‘আগে প্রধানমন্ত্রীর অনুস্বাক্ষরে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারতেন। মন্ত্রিসভার অনুমোদনক্রমে প্রধানমন্ত্রীর অনুস্বাক্ষরে যেন রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন সেটা বলেছি। নাগরিক পার্টি প্রস্তাব রেখেছে, মন্ত্রিসভা নয়, সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে বা সরাসরি সংসদের অনুমোদনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন।’
এসিপির সদস্য সচিব বলেন, বিগত সময়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মোটিভ এবং রাজনীতিকভাবে ব্যবহার হয়েছে। তাতে করে আভ্যন্তরীণ গোলযোগ এই বিষটা যুক্ত হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরোধীদের দমন করার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। আঞ্চলিক অখণ্ডতার কথা বলা হয়েছে, বহিঃশত্রুর আক্রমণ যুদ্ধাবস্থা, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আঞ্চলিক অখণ্ডতা এই বিষয়গুলো ঘটলে সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি বা সংসদের অনুমোদনক্রমে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। যথা সম্ভব মৌলিক মানবাধিকারের জায়গাগুলোকে অক্ষুণ্ণ রেখে যেন জরুরি অবস্থার দিকে সরকার অগ্রসর হয় সেই বিধান জারি করতে হবে। জরুরি অবস্থা চলাকালীন যাতে নাগরিকরা তাদের বিচার পেতে সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই বিধান রাখার কথা বলেছি।
প্রধান বিচার পতি নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে আখতার বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি চাইলে যে কোনো ব্যক্তিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করতে পারতেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইনের ভিত্তিতে কোনো নিয়ম নীতি ছিল না। যার ফলে দলীয় বিবেচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ঘটনা অতীতে ঘটেছে। সে ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে, একটি আইনের ভেতর দিয়ে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের জায়গায় একটা বিধান তৈরি করার। আজকে কমিশনের তরফ থেকে আগের প্রবীণ ব্যক্তিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার প্রস্তাব করা হয়। আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির তরফ থেকে মনে করি যদি দুইজনের অপশন রাখা হয় সেক্ষেত্রে দলীয় আনুগত্যের জায়গা তৈরি হতে পারে। সেই বিবেচনায় এনসিপি জ্যেষ্ঠ বিচারককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করেছে। সর্বশেষ জ্যেষ্ঠতম বা জ্যেষ্ঠ দুজনের জায়গায় আটকে আছে।