বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

প্রকাশিত: ১২:০২, ১১ জুন ২০২৫

শ্বশুরকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করল জামাতা

শ্বশুরকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করল জামাতা
সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার মধুপুরে গরুর হাটে শ্বশুরকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জামাতার বিরুদ্ধে।

 

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৯টার দিকে উপজেলার মধুপুর পশুহাট-সংলগ্ন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত শ্বশুর টুটুল হোসেন (৪০) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা তুরাব হোসেনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে ফিরে স্থানীয় বাজারে ব্যবসা করতেন। অন্যদিকে ঘাতক জামাতা ইমরান হোসেন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকার বাসিন্দা।

 

জানা যায়, টুটুল হোসেনকে হত্যার পর একটি মোটরসাইকেল ও একটি দেশীয় শটগান ফেলে পালিয়ে যায় হত্যাকরীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু। পরে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থল এসে একটি শটগান, কয়েকটি গুলি ও মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।

 

এ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান।

 

নিহতের ভাই সাব্বির হোসেন বলেন, রাত ৯টার দিকে মধুপুর গরুর হাটে দুজন মিলে চা খাচ্ছিলেন টুটুল। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেয়ের জামাই ইমরান টুটুলের মুখে গুলি করেন। এ সময় তাকে একটি সিএনজিতে তুলে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হই। পথে তার মৃত্যু হলে সিএনজি থেকে তার মরদেহ নামিয়ে রাস্তার পাশে রাখা হয়৷

 

সাব্বির আরও বলেন, ইমরান ও তার সঙ্গে আরও তিনজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। তারা দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছিলেন। ইমরান নিজ হাতে তার শ্বশুর টুটুলের মুখে গুলি করে হত্যা করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়া দিলে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে দুজন পালিয়ে যান। এ সময় মোটরসাইকেল ও অস্ত্র ফেলে রেখে ইমরান ও আরেকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

 

নিহতের দুলাভাই হেলাল মুন্সি বলেন, টুটুলের মেয়ের জামাই ভালো না। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। কয়েক মাস আগে টুটুল বিদেশ থেকে বাড়িতে আসে। এরপর জামাইকে তালাক দেয় মেয়ে টুম্পা। এরপর থেকেই জামাই ইমরান নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। আজ রাত ৯টার দিকে টুটুল মধুপুর বাজারে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে জামাই ইমরান ও তার লোকজন টুটুলকে গুলি করে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার ফাঁসি চাই।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, চার বছর আগে টুটুলের মেয়ে টুম্পার সঙ্গে ইমরানের বিয়ে হয়। পরে ইমরান দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। তাদের চার বছর বয়সী আইয়ান নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে প্রায় তিন বছর বাবার বাড়িতে থাকেন টুম্পা ও তার ছেলে। ৮ মাস আগে টুম্পার বাবা টুটুল সৌদি আরব থেকে বাড়িতে আসেন। ৮ মাস আগে ইমরানকে তালাক দেন টুম্পা। এরপর থেকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন ইমরান৷ আজ ইমরান গুলি করে হত্যা করল শ্বশুর টুটুলকে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা৷

 

এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, টুটুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়।

 

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের পাশ থেকে একটি শটগান, কয়েক রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। নিহতের মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত বিষয়: