গোপালগঞ্জে পুলিশের দুই মামলায় আসামি ৮০০, গ্রেফতার ৯০

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) 'জুলাই পদযাত্রা'কে ঘিরে দু’টি পৃথক মামলায় জেলার মুকসুদপুরে ৬৭ জন ও কাশিয়ানীতে ২৩ জনসহ মোট ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় প্রায় ৮০০ মানুষকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন অনেকেই। এমনকি একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানও নিজেই আতঙ্কে বাড়ি ছাড়ার কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় এবং কাশিয়ানীতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অপর মামলায় এসব গ্রেপ্তার হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, সহিংসতার সময় পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, ভাঙচুর, হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে পুলিশ পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
অন্যদিকে কাশিয়ানী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় বাদী উপপরিদর্শক আলিমুল হুদা জনি বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে সাম্পান হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। এ ঘটনায় ৩০০-৩৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মুকসুদপুর উপজেলার কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, সহিংসতার পর এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, তার ইউনিয়নের একজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনিও গ্রেপ্তারের ভয়ে এলাকা ছেড়েছেন বলে জানান।
এদিকে কাশিয়ানী উপজেলার বাট্টাইধোবা গ্রামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তবে পুলিশ বলছে, কোনো পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এর আগে ১৬ জুলাই এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে দিনভর দফায় দফায় সহিংসতা, হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন, অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই রাতেই গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করে জেলা প্রশাসন। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, কারফিউয়ের সময় বাড়িয়ে আজ শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং আংশিক শিথিল করে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়েছে।