ভাঙ্গায় অবরোধের তৃতীয় দিনে থমথমে অবস্থা, যান চলাচল স্বাভাবিক

ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ডাকা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
পুখুরিয়া এলাকায় কয়েকজন স্থানীয় জনতা সকাল ৯টার দিকে অবরোধে অংশগ্রহণ করতে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। ফলে সড়ক অবরোধ সম্ভব হয়নি।
ভাঙ্গা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাফুর আহমেদ জানান, “আমাদের রেলপথ ক্লিয়ার আছে। সকাল থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতার খবর পাওয়া যায়নি। ভাঙ্গা হয়ে খুলনা থেকে নকশিকাঁথা কমিউটার ও জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ঢাকায় গেছে, আর সুন্দরবন এক্সপ্রেস খুলনা গেছে।”
ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং জনসাধারণ অতিরিক্ত ভোগান্তির শিকার না হন। পুকুরিয়াতে কিছু স্থানীয়রা মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। ফলে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। তাদের ভাষ্যে, “এটি ন্যায্য আন্দোলন, কেউ যেন ফ্যাসিস্ট বা অন্য কোনো রং না মাখায়। এই আন্দোলন আমাদের প্রাণের দাবি, শিকড়, আবেগ আর অস্তিত্বের প্রশ্ন। প্রশাসন যদি মনে করে আমরা চুপচাপ মেনে নেব, তাহলে ভুল করছে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা জানি আন্দোলন মানে ভোগান্তি। কিন্তু ভাঙ্গা রক্ষার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। রাস্তায় বসতে হবে, বসবো। প্রয়োজনে রাত কাটাবো মহাসড়কে। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ, কিন্তু অবিচার হলে প্রতিবাদ করবই। আলগী আর হামিরদী ভাঙ্গার ছিল, ভাঙ্গারই থাকবে—এটাই আমাদের শেষ কথা।”
এদিকে, এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হামিরদী ও আলগী ইউনিয়নের মনসুরাবাদ, পুকুরিয়া, সুয়াদী এলাকার মহাসড়কে সংলগ্ন বাজার ও দোকানপাটগুলো কম খোলা রয়েছে। সবার মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও ভয় কাজ করছে। অনেকেই গতকাল রাত নিজের ঘরে ঘুমাননি এবং আশপাশের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের প্রতিবাদে স্থানীয়রা গত রোববার থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন।