হংকং বিউটি গ্যালারিতে
ভেজাল সামগ্রীর সাম্রাজ্য গড়েছেন যুবলীগ নেতা বাবু!

সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার বহুল পরিচিত “হংকং বিউটি গ্যালারি”তে বিক্রি হওয়া প্রসাধনীর প্রায় ৭০ শতাংশই ভেজাল—এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিদেশি ব্র্যান্ডের মোড়কে লেজার প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে হুবহু নকল করে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি তাদের। যার ফলে অনেকেই মারাত্মক চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আশুলিয়ার আমবাগান এলাকার বাসিন্দা লিজা বেগম জানান, হংকং বিউটি গ্যালারির ক্রিম ব্যবহারের পর তার ত্বকে মারাত্মক ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে। “ত্বকে পুড়েযাওয়া এবং দাগ পড়ে যাওয়ার মত সমস্যায় ভুগছি,” বলেন তিনি।
এ দোকানের কর্ণধার নজরুল ইসলাম বাবু, যিনি স্থানীয় রাজনীতিক মোক্তার হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, বাবু ও তার অনুসারীরা অতীতে রাজনৈতিক সহিংসতায়ও জড়িত ছিলেন। জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছে বাবু গং। ভুয়া ব্র্যান্ডের আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এসব ভেজাল প্রসাধনী বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তার দোকান ঘুরে দেখা যায়, বাজারজাত করা হচ্ছে গার্নিয়ার, লরেল, রেভলন, নিভিয়া, প্যানটিন, হুগো, ফেরারি, ডাভ ইত্যাদি নামী ব্র্যান্ডের নকল পণ্য। এসব পণ্যের অধিকাংশই সাভার, কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জহির কামাল জানান, এসব প্রসাধনীর রাসায়নিক উপাদান ত্বকের ক্যানসার, স্নায়বিক দুর্বলতা ও দীর্ঘমেয়াদি চর্মরোগের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে রং ফর্সাকারী ক্রিমগুলোর ক্ষতিকর দিক নিয়ে তিনি সতর্ক করেন।
ডা. এম এন হুদা, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ, বলেন: “বাজারে যেসব ভেজাল প্রসাধনী পাওয়া যাচ্ছে, তা ত্বকে বার্ন, অ্যালার্জি এমনকি মুখের আকৃতি বিকৃত করে দিতে পারে। রং ফর্সাকারী কোনো সঠিক বৈজ্ঞানিক সমাধান নেই, বরং এগুলো প্রতারণার বড় উৎস।”
এক ভুক্তভোগী হাসিবা মাহজাবিন জানান, “নাইট ক্রিম ব্যবহারের পর মুখে মেছতা পড়ে গেছে, যা আজও ভালো হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “ভালো মানের প্রসাধনী কোথায় পাব, সেটাই এখন প্রশ্ন।”
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, “ভেজাল ও নকল পণ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন বাবু। তিনি জানান, বর্তমানে থাইল্যান্ডে আছি। দেশে এসে কথা বলব।
দ্বিতীয় পর্বে,
বাবুর অপরাধ সাম্রাজ্যের পেছনের হাত কার?