মাগুরায় সাকিবের বাবাসহ ৭৯ জনের নামে মামলা

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ৯ মাস পর মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বাবাকে প্রধান আসামি করে মাগুরা জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
শনিবার (১৮ মে) মাগুরা সদর থানায় ফৌজদারি কার্যবিধি ও বিস্ফোরক আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলাটি করেন জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের কেয়ারটেকার আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি।
সোমবার (২৬ মে) মামলার তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী।
মামলায় আসামি হিসেবে মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজা কুটিলসহ ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন আরও ১৫০ থেকে ২০০ জন।
ওসি বলেন, গত বছরের ৪ আগস্টের ঘটনায় আবু তাহের (৩১) নামে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মী। তারা পরস্পর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী।আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় ঘটনার দিন ৪ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে হাতবোমা, পিস্তল, শটগান, বন্দুক, রামদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, লোহার রড, শাবল, ককটেল বোমা, প্লাস্টিকের টবভর্তি পেট্রোল নিয়ে মাগুরা শহরের ইসলামপুরপাড়ায় অবস্থিত বিএনপি কার্যালয়ে এসে হামলা চালান এবং অফিসকক্ষের ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
মামলায় ১নং আসামি সাকিবের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজা কুটিলের বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বিএনপি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এ সময় কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মাগুরা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রয়াত হাবিবুর রহমানের বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন- জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাখারুল ইসলাম শাকিল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হাসান মাকুল, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকিব হাসান তুহিন প্রমুখ।
মামলার বাদী মো. আবু তাহের মাগুরা সদর উপজেলার পাথরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন কর্মী এবং ওই কার্যালয়ের কেয়ারটেকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনার দিনও আমি পার্টি অফিসে ছিলাম। দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করতে দেরি হয়েছে। ঘটনার সময় যারা ছিলেন, তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত নন, এমন কাউকে আসামি করলে সেটা দুঃখজনক ব্যাপার। তবে বিএনপির কার্যালয়ে যারা হামলা করেছিলেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।