‘চাঁদাবাজ রিয়াদ’ কি আবার দলে ফিরছে? ফতুল্লায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম শঙ্কা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন একাংশের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র সংগঠিতভাবে চাঁদা আদায় এবং ব্যবসায়ীদের ওপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। ওই চক্রের নেতৃত্বে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে স্থানীয়দের অভিযোগে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ভাষ্য, নির্মাণকাজ শুরু থেকে দোকান বসানো—সব ক্ষেত্রেই রিয়াদ চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ, হামলার ভয় এবং পরে সাজানো মামলার মুখে পড়তে হয়—এমন অভিযোগও করেছেন তারা।
নিজেকে ব্যবসায়ী ও শিক্ষিত রাজনৈতিক কর্মী পরিচয় দিলেও এলাকায় তাকে ভয়ংকর চাঁদাবাজ হিসেবে চেনেন বলে জানান স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, যার ওপর তার নজর পড়ে তাকে হয় নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়, না হলে এলাকায় ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, চাঁদা না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ২–৩টি মামলা দায়ের করা হয়। রিয়াদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডসহ মারধরের অভিযোগও বিভিন্ন সময়ে উঠেছে বলে দাবি করেন তারা।
এই অভিযোগে দলীয় পর্যায়ে তদন্তের পর তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ। একই অভিযোগে একসময় বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাকে আটক করেছিল বলে তাদের দাবি। পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হলেও রিয়াদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন—তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঝুট (পরিত্যক্ত কাপড়) ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রিয়াদ একটি তালিকা তৈরি করে দেন। সেই তালিকা অনুযায়ী ব্যবসা না দিলে কারখানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ তাদের।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রের দাবি, দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর আবারও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন রিয়াদ। এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন অনেক ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশ না করে এক কারখানা মালিক বলেন, “যদি তিনি আবার দলে ফিরে আসেন, তাহলে ফতুল্লায় ব্যবসা করা আরও কঠিন হয়ে যাবে। নতুন করে সন্ত্রাসী তাণ্ডব শুরু হবে—এই ভয় এখন সবার মধ্যে।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, এখনও অনেক ব্যবসায়ী রিয়াদের ভয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে পারছেন না। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অনেকে তার দেওয়া কথিত ভুয়া মামলায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রিয়াদের কথিত তৎপরতা থেকে মুক্তি পেতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে বিচার ও কঠোর ব্যবস্থা দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এই ধরনের প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।



























