শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

বিনোদন ডেস্ক :

প্রকাশিত: ২১:১৭, ২৪ জুলাই ২০২৫

উত্তরা আবাসিক এলাকায় শুটিং বন্ধের নোটিশ

উত্তরা আবাসিক এলাকায় শুটিং বন্ধের নোটিশ
সংগৃহীত

রাজধানী উত্তরার ৪ নম্বার সেক্টরের একটি বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে নাটক ও সিনেমার শুটিং হয়ে আসছে। হঠাৎ করে ওই বাড়িতে শুটিং বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরা ৪ নম্বার সেক্টরের আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি।

 

গেল ২০ জুলাই ইস্যুকৃত নোটিশে বলা হয়েছে, শুটিং ঘিরে আবাসিক এলাকায় জনসমাগম বৃদ্ধি ও রাস্তায় যানবাহান চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। ফলে ৪ নাম্বার সেক্টরে শুটিং বন্ধ রাখার জন্য বাড়ির মালিককে অনুরোধ করা হয়েছে।

 

কল্যাণ সমিতির নোটিশে বলা হয়েছে, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, উপরোক্ত (বাড়ি নম্বার-৪২, রোড-১২, সেক্টর-৪) বাড়িতে বিগত বহুদিন ধরে শুটিং হাউজ হিসেবে ব্যবহার করে অত্র আবাসিক এলাকায় নিয়মিত শুটিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, এ ধরনের শুটিং কার্যক্রমের কারণে রাস্তায় জনসমাগম সৃষ্টি হচ্ছে, যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং সেক্টরের স্থায়ী বাসিন্দারা তাদের স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

 

এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে জানিয়ে নোটিশে বলা হয়, আপনার জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শুটিং হাউজ পরিচালনা করা সম্পূর্ণ আবাসিক নীতিমালার পরিপন্থী। এর ফলে এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং সেক্টরবাসীর ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

 

সবশেষ শুটিং বন্ধের বিষয়ে নোটিশে বলা হয়, সেক্টরবাসীর ক্রমবর্ধমান অভিযোগ ও সবার নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশের কথা বিবেচনা করে আপনাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে যে, অনতিবিলম্বে এই শুটিং কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন এবং শুটিং হাউজ হিসেবে ভাড়া প্রদান থেকে বিরত থাকবেন। সেক্টরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পুনরুদ্ধারে আপনার দায়িত্বশীল ভূমিকা অত্যন্ত জরুরী। আমরা সবাই জানি, উত্তরা ৪ নং সেক্টর একটি আদর্শ, পরিবেশ বান্ধব ও শান্তিপূর্ণ আবাসিক এলাকা হিসেবে পুরো উত্তরার ভেতর পরিচিতি লাভ করেছে। অতএব এই সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য আপনার আন্তরিক সহযোগিতা একান্তকাম্য।

এদিকে, কল্যাণ সমিতির নোটিশের ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে অভিনেতা রওনক হাসান লিখেছেন, ‘উত্তরা সেক্টর ৪ কল্যান সমিতি থেকে শুটিং বন্ধের নোটিশ এসেছে। আবাসিক এলাকায় নানান রকম অফিস হয়। শতশত স্কুল হয়, মাল্টিটাইপ ব্যাবসা হয়। শুধু শুটিং এ সমস্যা!’

তিনি আরও বলেন, ‘আগেও এধরনের চেষ্টা হয়েছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট সংগঠন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশ প্রশাসন মিলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে সমাধান করেছেন। এবারও আশা করি তাই হবে। সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

বিষয়টি নিয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মামুন অপু বলেন, ‘লাবনী শুটিং হাউজটি নিয়ে অনেকদিন ধরেই একটি মহল কাজ করছিল। তাদের প্রধান লক্ষ্য এটি উচ্ছেদ করা। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো শুটিং হাউজ।’

হাউজিং কর্তৃপক্ষের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই শুটিং হাউজ রাস্তার একেবারে ডেড এন্ডে (শেষ প্রান্তে)।তাই জ্যাম বা বিশৃংঙ্খলার প্রশ্নেই আসে না। এ ছাড়া আমাদের কাজই হলো সাউন্ডবিহীন পরিবেশে। শব্দ আমাদের শত্রু। তাই যে ছুতো বলা হচ্ছে তা পরিকল্পিতভাবে উপস্থাপন করা। যেন শুটিং হাউজটি উচ্ছেদ করতে সুবিধা হয়। আমাদের সংস্কৃতির ওপরে যে নানা ধরনের হামলা হয়, এই নোটিশ তারই একটা অংশ। আমরা পেশাদার। সবকিছু মেনেই কাজ করি। যদি শুটিং হাউজ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে শিল্পীরা কাজ করবে কোথায়? এর বিরুদ্ধে আমরা লিগ্যাল অ্যাকশনেও যাব।’

সম্পর্কিত বিষয়: