বুধবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এবার নেপালের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের গুঞ্জন

এবার নেপালের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের গুঞ্জন
সংগৃহীত

ব্যাপক দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেলও পদত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। 

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে তিনি ‘প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ’ করেছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

যদিও পরবর্তীতে নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেল পদত্যাগ করেছেন—এমন খবরকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে তার কার্যালয়। এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্টের দপ্তর বলেছে, চলমান সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে প্রেসিডেন্ট পাউডেলের পদত্যাগের খবর সত্য নয় এবং তিনি এখনও দায়িত্বে রয়েছেন।

দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জেন-জি প্রজন্ম নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা কারফিউ অমান্য করে দ্বিতীয় দিনের মতো রাস্তায় অবস্থান করছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের মাঝে মঙ্গলবার সকালের দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি।

গত সপ্তাহে কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার দেশটিতে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর দেশের হাজার হাজার তরুণ-তরুণী সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন। সোমবার রাত থেকে সহিংসতা চরম আকার ধারণ করার পর মঙ্গলবার ভোরের দিকে দেশটির সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দেশটিতে চলমান এই সঙ্কট ক্ষমতাসীন জোট সরকারকে ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ছাড়াও কয়েকজন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলোও জোট সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ভাবছে।

মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা দেশটির সংসদ ভবনের কিছু অংশে আগুন ধরিয়ে দেন এবং শীর্ষ নেতাদের বাড়িঘরে একযোগে হামলা চালান। হামলার নিশানায় ছিল প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেল, নেপালি কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবা ও মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহলের বাসভবন।
এছাড়া দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু দেউবা রানার মালিকানাধীন একটি বেসরকারি স্কুলে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুলটি জ্বলছে এবং বিক্ষোভকারীরা উল্লাস করছেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছিলেন। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় নেপালের সামরিক বাহিনীর ১২টি উড়োজাহাজে করে মন্ত্রীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫টি উড়োজাহাজ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজে নিয়োজিত ছিল।
নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচলের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র-খ্যাত ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সব ধরনের ফ্লাইটের উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিক্ষোভকারীরা ড্রোন, আতশবাজি ও লেজার লাইট দিয়ে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছেন।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে স্থগিত করা হয়েছে। দেশীয় এয়ারলাইনস বুদ্ধ এয়ারসহ অন্য কোম্পানিগুলোও ফ্লাইট বাতিল করে।

সম্পর্কিত বিষয়: