গাজায় প্রাণহানি ৬৪ হাজার ছাড়াল, ক্ষুধায় ঝরল শিশুসহ আরও ৭ প্রাণ

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় মৃতের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। এর পাশাপাশি অনাহার ও দুর্ভিক্ষে প্রতিদিনই বাড়ছে প্রাণহানি। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু ক্ষুধায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭ জন, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সর্বশেষ হামলা ও দুর্ভিক্ষে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৭১৮ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত একদিনে হাসপাতালে পৌঁছেছে ৭২ জনের মরদেহ। আহত হয়েছেন আরও ৩৫৬ জন। ফলে এখন পর্যন্ত গাজায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫৯ জনে। অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপ আর রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
একই সময়ে ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ৯ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ৮৭ জন। এ নিয়ে গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহকালে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৪৬৫ জনে, আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ হাজার ৯৪৮ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনাহারে মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুর্ভিক্ষে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১১ জনে, যাদের মধ্যে ১৪২ জন শিশু।
শুধু গত মাসেই জাতিসংঘ সমর্থিত ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি গাজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ অঞ্চল ঘোষণার পর থেকে মারা গেছেন ১৩৩ জন, এর মধ্যে ২৭ জন শিশু।
চলতি বছরের মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ২৪ লাখ মানুষ মারাত্মক দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছেন। এর পর ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে হামলা শুরু হলে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ১৭০ জন নিহত এবং ৫১ হাজার ৮১৮ জন আহত** হয়েছেন। এতে জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে যায়।
এর আগে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা চলছে।