আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প, নিহত ২০

আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬।
রোববার (৩১ আগস্ট) গভীর রাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির খবরে বলা হয়, নানগারহার ও কুনার প্রদেশে আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, আহতের সংখ্যা ১১৫ জনেরও বেশি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদ শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং গভীরতা ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার (৫ মাইল)। এর পর অন্তত তিনটি পরাঘাত হয়, যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানী কাবুলও, যা কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে। এমনকি প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরের পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্গম ও পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত নানগারহার ও কুনার প্রদেশে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এসব অঞ্চলের ঘরবাড়ি ভূমিকম্প সহনশীল নয়। এর আগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। কারণ এটি ভারত ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ভূমিকম্পের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে দেশটিতে। শুধুমাত্র গত তিন দশকে ভূমিকম্পে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
১৯৯১ সালে হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে হওয়া এক ভূমিকম্পে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়নে নিহত হয়েছিলেন ৮৪৮ জন।
১৯৯৭ সালে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের খোরাসান প্রদেশে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিলেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। ধ্বংস হয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি।
১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ তাখারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তানে প্রায় ৪ হাজার মানুষ নিহত হন। এর মধ্যে শুধু আফগানিস্তানেই মারা যান ২ হাজার ৩০০ জন।