সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ১২ মে ২০২৫

স্ত্রী-সন্তানসহ শামীম ওসমানকে দুদকে তলব!

স্ত্রী-সন্তানসহ শামীম ওসমানকে দুদকে তলব!
সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান, তার মেয়ে লাবিবা জোহা অঙ্গনা ও ছেলে ইমতিনান ওসমানকে জিজ্ঞাসাবাদের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তলবি চিঠিতে তাদের আগামী ১২ মে হাজির হতে বলা হয়েছে।

 

দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম সই নোটিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অনুসন্ধান টিমের অপর সদস্যরা হলেন– সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও পিয়াস পাল।

 

মূলত সিন্ডিকেট করে টেন্ডার বাণিজ্য, বিভিন্ন খাতে চাঁদাবাজি, পরিবহন ও জুট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ, দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্য, জমি দখলসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে শামীম ওসমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ক্রয় ও দুবাইয়ে ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

 

শামীম ওসমান ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময়ে তার ব্যক্তিগত তেমন উল্লেখযোগ্য সম্পদ ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন মেয়াদ শেষ হলে ২০০১ সালে ভারতে পালিয়ে যান। ২০০৮ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালে তিনি দেশে আসেন। ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি সেলিনা হায়াত আইভীর কাছে পরাজিত হন। এরপর ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে ছিলেন।

হলফনামা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১৪ সালে তার হলফনামায় ১০ শতাংশ কৃষি জমি, ১৬ শতাংশের ওপর জমিতে দোতলা বাড়ি ও উত্তরায় ৯ কাঠা জমির মালিকানা রয়েছে। তার বাড়ি, দোকান ভাড়া, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যবসা ও ব্যাংকের আমানতের সুদ বাবদ বছরে আয় ২৭ লাখ টাকা ছিল।

 

যেখানে বর্তমানে তার ১২৩ শতাংশ কৃষি জমি, ১০ শতাংশ অকৃষি জমি, পূর্বাচলে উপশহরে ১০ কাঠার প্লট ও ২টি ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি রয়েছে। বছরে তার আয় দাঁড়িয়েছে ৭৯ লাখ টাকা।

অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। যার মধ্য রয়েছে ১৩টি পণ্যবাহী জাহাজ। তার জ্বালানি তেল আমদানি, পরিবহন ও সরবরাহকারী একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নসিব পরিবহন নামের কোম্পানি জবরদখল করেছেন শামীম ওসমান। এ ছাড়া পরিবহন খাত, এলজিইডি ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে কোটি কোটি চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। জোর করে শামীম পরিবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ও চাষাড়া ক্লাব দখল করেছিল। তার মেয়ে কানাডার নাগরিক বলে জানা গেছে।

এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার বা ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগে শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি ও শ্যালক তানভীর আহমেদের নামে মামলা করে দুদক।

মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে তার স্ত্রী ও কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমা ওসমান ও প্রতিষ্ঠানের এমডি তানভীর আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে।

ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ২(ক) (২) ধারা লঙ্ঘন করে বিটিআরসির আইজিডব্লিউ লাইসেন্সধারী অপারেটর হিসেবে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ টাকা আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল মিনিটের মূল্য বাবদ অর্জিত ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার (বৈদেশিক মুদ্রা) পাচার করে কিংবা আনয়নযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ করেন।

সম্পর্কিত বিষয়: