রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
৮৭৮ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা

৮৭৮ কোটি টাকার অর্থপাচার, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একইসাথে আদালতের নির্দেশে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব এবং যমুনা ফিউচার পার্কের এক লাখ বর্গফুটের একটি বাণিজ্যিক স্পেস ক্রোক করা হয়েছে।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দীর্ঘ অনুসন্ধান চালানো হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি কিনে এবং পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে তা বিক্রি করে বিপুল অর্থ উপার্জন করে।
২০২২ সালের ৮ মার্চ রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ অপু এবং মেহেদী হাসান দিপু বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে ৭.৫৭৫১ একর জমি বিক্রি করেন। পরবর্তীতে, ২০২২ সালের ১ জুন একই জমির ৬.৩৩৭৫ একর বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে বিক্রি করে ৫৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও, ভূয়া বালিভরাট কার্যাদেশের মাধ্যমে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেন তারা। একইভাবে ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকেও ভূয়া মূল্যায়নের ভিত্তিতে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সিআইডির অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ না করে, তা বিদেশে পাচার করা হয়। এমনকি ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা ও বারবুডায় ২০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে রফিকুল ইসলাম নাগরিকত্বও গ্রহণ করেছেন।
এইসব ঘটনায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর বিভিন্ন ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় গুলশান থানায় মামলা (নম্বর-১৪, তারিখ-০৭/০৮/২০২৫) দায়ের করেছে সিআইডি।
এছাড়া, বিজ্ঞ আদালতের আদেশে রফিকুল ইসলামের এবং তার সহযোগীদের নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল-২ এ থাকা ১ লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেসও ক্রোক করা হয়েছে।