বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

সংবাদ পরিক্রমা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

৩৫ বছর পর আজ রাকসু নির্বাচন

৩৫ বছর পর আজ রাকসু নির্বাচন
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর)। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।

নির্বাচন হবে কি না— এমন অনিশ্চয়তা ও সংশয়ের অবসান ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এখন উৎসবমুখর। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে উচ্ছ্বাস ও প্রত্যাশার মিশেল।

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল দখল, গেস্টরুম সংস্কৃতি ও আধিপত্যের রাজনীতি আপাতত বন্ধ রয়েছে। কোনো ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এখন আর শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। 

শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই পরিবর্তনগুলো যদি স্থায়ী হয়, তবে ছাত্ররাজনীতি ফিরে আসবে সুস্থ ধারায়; শিক্ষার্থীদের অধিকার, নিরাপত্তা ও অংশগ্রহণ আরও নিশ্চিত হবে।

রাকসুর ৬৩ বছরে ১৫তম নির্বাচন

রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে। দীর্ঘ ৬৩ বছরে এটি ১৫তম নির্বাচন। পাকিস্তান আমলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সর্বাধিক— ৮টি নির্বাচন।
৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাকসু ও ছাত্র সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীন বাংলাদেশেও জাতীয় নেতৃত্ব তৈরিতে রাকসুর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তবে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়বার রাকসু নির্বাচন হয়েছে; সর্বশেষটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে।

এবারের নির্বাচনকে বলা হচ্ছে রাকসুর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও অংশ নিচ্ছেন সৃজনশীল প্রচারণা, সময়োপযোগী ইশতেহার ও ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে। ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

এবার রেকর্ড হয়েছে একাধিক দিক থেকে— সর্বাধিক প্রার্থী, সর্বাধিক ভোটার এবং প্রথমবারের মতো প্রার্থী বাছাইয়ে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাকসুর ২৩টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩০৫ জন প্রার্থী, যার মধ্যে নারী ২৬ জন। এ ছাড়া সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন এবং ১৭টি হলে হল সংসদের ১৫টি পদে মোট ৫৫৫ জন প্রার্থী লড়ছেন। সব মিলিয়ে ৪৩ পদে ৯১৮ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন— যা রাকসুর ইতিহাসে সর্বাধিক।

এবার মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ৩০৫ এবং ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন।
ভোটগ্রহণ হবে ৯টি ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্র ও ৯৯০টি বুথে।
প্রত্যেক ভোটার রাকসু ও হল সংসদের মোট ৪৩টি পদে ভোট দিতে পারবেন।

হলভিত্তিক ভোটকেন্দ্রের তালিকা: 

  • সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবন: জুলাই–৩৬ ও রোকেয়া হল (৪৬৬৫ ভোটার)
  • মমতাজ উদ্দিন কলা ভবন: মন্নুজান হল (২৩৭৮ ভোটার)
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভবন: তাপসী রাবেয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও রহমতুন্নেসা হল (৪২৮২ ভোটার)
  • ইবনে হাইয়ান বিজ্ঞান ভবন: শহীদ হবিবুর রহমান ও শামসুজ্জোহা হল (৪২৫৫ ভোটার)
  • জামাল নজরুল বিজ্ঞান ভবন: বিজয়–২৪ ও নবাব আবদুল লতিফ হল (২৬৪৭ ভোটার)
  • সত্যেন্দ্রনাথ বসু ভবন: ফজলুল হক ও মতিহার হল (২৮৬৪ ভোটার)
  • জগদীশ চন্দ্র ভবন: মাদার বখশ ও সোহরাওয়ার্দী হল (৩৭৫৫ ভোটার)
  • জুবেরী ভবন: সৈয়দ আমীর আলী ও শাহ মখদুম হল (৩০৪২ ভোটার)

জনপ্রিয়