পদত্যাগে দুই উপদেষ্টাকে ৩ দিনের আলটিমেটাম!

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ উসমান হাদি বলেছেন, ‘ছাত্র-উপদেষ্টা স্যারেরা, হামিদকে ছেড়ে দেওয়ার দায়ে আপনারা তিন দিনের মধ্যে পদত্যাগ করুন।’
বৃহস্পতিবার (৮ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আছেন মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের ইঙ্গিত করে এই পোস্ট দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, ‘এরপর আমরা ইন্টেরিমের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব। হয় গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিস্ট লীগ নিষিদ্ধ হবে, নয়তো ইন্টেরিম বিদায় নেবে। এই দায় থেকে বাঁচার জন্য আপনাদেরকে আমরা সময় দিলাম। যদি সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের কাতারে আসেন, তাইলে সম্মান পাবেন। আর যদি চেয়ার ছেড়ে দিতে কান্না পায়, তাইলে এরপর থেকে আপনাদেরকে ‘তুই’ বলা শুরু হবে! সঙ্গে বঙ্গীয় গাইল।’
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি।
পোস্টে তাজনূভা লিখেন, এনসিপির কেউ না, জুলাইয়ের আগের সাধারণ জনগণের কাতারের তাজনূভা হয়ে বলছি, মাহফুজ আর আসিফের সরকার থেকে সরে আসা উচিত। সরে এসে আবার রাজপথে জনগণের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
আপনাদের আর ওখানে মানাচ্ছে না উল্লেখ করে এনসিপির এ নেত্রী আরও লিখেন, তারা যে সরকারের অংশ, সে সরকার আর অভ্যুত্থানপন্থি নাই। আপনাদের আর মানাচ্ছে না ওখানে। সরে এসে জনগণকে আশ্বস্ত করেন। জুলাইয়ের শহিদদের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন।
তিনি আরও লেখেন, আমিই এত মর্মাহত, শহিদ, আহতদের কেমন লাগছে। তাদের চোখের সামনে আসামিরা দাপটের সঙ্গে মাথা উঁচু করে পালাচ্ছে।
পোস্টের শেষাংশে তাসনূভা জাবীন বলেন, আমার মনে হয়, আমাদেরকে আবার রাজপথে এক হতে হবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে। কারণ জুলাই শেষ হয় নাই, আদতে জুলাই এখনও চলছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে পতন হয় শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের। এরপর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। অনেকে ইতোমধ্যে দেশ ছাড়লেও এতদিন দেশেই ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। অবশেষে তিনিও দেশ ছাড়লেন।
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ৯ মাস পর বুধবার মধ্যরাতে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ সময় ছেলে ও শ্যালক তার সঙ্গে ছিলেন।
বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, রাত ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান আবদুল হামিদ। এ সময় তার সঙ্গে ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ড. এএম নওশাদ ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশনে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে দেশছাড়ার সবুজ সংকেত পান সাবেক রাষ্ট্রপতি।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো সংস্থার কাছে কোনো অভিযোগ ছিল না বলে জানা গেছে। রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে তারা তিনজন ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেন।
আবদুল হামিদ আওয়ামী লীগের সময় ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।