শনিবার ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

সংবাদ পরিক্রমা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৩০, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিয়ের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় নববধূর কথিত সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে আবু বক্কর প্রকাশ আসিফ (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মরদেহ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় চার কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

নিহত আসিফ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কেন্ডা গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার ছেলে। দীর্ঘদিন সৌদি আরবে চাকরি করে দেশে ফিরে গত ২৭ অক্টোবর সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামে বিয়ে করেন তিনি।

পরিবারের দাবি, বিয়ের পর ৮ নভেম্বর নববধূকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে স্থানীয় যুবক রাব্বি প্রকাশ বাপ্পি—যিনি নববধূর সাবেক প্রেমিক বলে অভিযোগ—ও তার সহযোগী পারভেজ পথরোধ করে আসিফকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহতের ছোট ভাই আরাফাত হোসেন বলেন, “আমার ভাবির সঙ্গে বাপ্পি নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল—এ তথ্য আমরা পরে জানতে পারি। তারাই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। অথচ ঘটনাটিকে অন্যদিকে নেওয়ার জন্য ভাবি ছুরিকাঘাতের একটি মামলা করেছে। আমরা আদালতে গিয়ে ভাবিকেও এই হত্যাকাণ্ডের আসামি করব।”

নিহতের মা আলেয়া বেগম, নানি রুপিয়া বেগমসহ স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তি মানববন্ধনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তৃতা দেন। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

অন্যদিকে নববধূর বাবা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার মেয়ে কোনোভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। বিয়ের আগেও তার কারও সঙ্গে প্রেম ছিল না, এমনকি মোবাইলও ব্যবহার করত না। আমরাও হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই।”

চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।”

সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

জনপ্রিয়