শনিবার ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

‘সরকার পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল না’, সিএনএন-নিউজ এইটিনকে হাসিনা

‘সরকার পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল না’, সিএনএন-নিউজ এইটিনকে হাসিনা
ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দেড় বছর পর বিদেশি শক্তির সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থান জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, গত বছরের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান এবং তাঁর সরকারের পতনে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশের কোনো ‘সরাসরি ভূমিকা’ তিনি এখন আর দেখেন না। এর আগে অবশ্য একাধিকবার এসব ঘটনার জন্য তিনি প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছিলেন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সিএনএন-নিউজ এইটিনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার দীর্ঘদিনের ভালো ও স্থিতিশীল সম্পর্ক রয়েছে। তাই ওয়াশিংটন বা অন্য কোনো বিদেশি শক্তি আমাদের রাজনৈতিক অস্থিরতায় সরাসরি জড়িত—এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

তবে তিনি দাবি করেন, সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করেছিলেন, যা অনেকের কাছে তাকে ভুলভাবে ‘উপযুক্ত গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব’ মনে করার কারণ হয়েছে।

হাসিনা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ছিল ‘ভালো’।

কোটা আন্দোলন থেকে সহিংসতা—পতনের পথে শেখ হাসিনা সরকারের শেষ সময়

২০২৪ সালের জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ও সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, সারা দেশে উত্তেজনা বাড়ে এবং জনরোষের মুখে দ্রুত বিস্তৃত হয় গণ-অভ্যুত্থান। চাপের মুখে দেশত্যাগ করেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকালে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সামরিক অস্ত্র ও শটগানের গুলিতে মারা যান।
বিবিসির অনুসন্ধানে ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা যায়—তখনকার প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার, রায় ১৭ নভেম্বর

গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধেও মৃত্যুদণ্ডের দাবি করা হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন শেখ হাসিনা

বিবিসিকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেন। তার ভাষায়, “এটি একটি ক্যাঙ্গারু কোর্টের সাজানো নাটক। আমি কখনোই নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিইনি।”

তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে হলে তা অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে করতে হবে।

জনপ্রিয়