শীতের সবজি পুরোদমে বাজারে, তবুও হাঁপিয়ে উঠছে ক্রেতারা
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির রঙিন উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। প্রতিদিনই বাড়ছে সরবরাহ। কিন্তু দাম? ক্রেতারা বলছেন—স্বস্তি এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম—সবকিছুই চলছে গত বছরের তুলনায় বেশি দামে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) শ্যামবাজার, যাত্রাবাড়ীসহ কয়েকটি বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়—সবজি ভরপুর, কিন্তু মুখ ভার ক্রেতাদের।
বিক্রেতারা দুষছেন অক্টোবরের অস্বাভাবিক বৃষ্টিকে। বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শীতকালীন ফসল। বহু এলাকায় নষ্ট হয়েছে সবজির ক্ষেত। তাই উৎপাদন কম, আর তার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বাজারে এখন যেসব সবজি পাওয়া যাচ্ছে—শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, গাজর, শালগম, পালং শাক, লাউ, মুলা—সবই সহজলভ্য। কিন্তু দামে যেন আগুন।
যাত্রাবাড়ী বাজারে সবজি কিনতে আসা কাসেম বলেন, “দাম কিছুটা কমলেও সাধ্যের মধ্যে নেই। কিছু কেনার আগে দু’বার হিসাব কষতে হচ্ছে।”
বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী, ভালো বেগুন কেজিতে ৮০–১০০ টাকা, ফুলকপি/বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০–৬০ টাকা, নতুন শিম ১০০ টাকা বা তার বেশি, কোথাও ৭০–৮০ টাকা, গত বছর এ সময়ে শিম মিলত ৫০ টাকায়, কপি ২০–৩০ টাকায়, নতুন আলু কেজিতে ১২০–১৫০ টাকা, বরবটি ৭০–৮০, ঢ্যাঁড়স ও পটোল ৫০–৭০ টাকা, নতুন মিষ্টিকুমড়া ৮০–১০০ টাকা, কিছু বিক্রেতা কেজিতে ৫০ টাকায়ও দিচ্ছেন।
শাকের দাম তুলনামূলক কম থাকলেও ক্রেতারা বলছেন—পরিমাণ কমেছে, ফলে দাম কমলেও মেলে না তেমন স্বস্তি।
আতিক ইসলাম নামে এক ক্রেতার ক্ষোভ, “শীতের সবজি বাজারে এসেছে অনেক দিন হলো। অন্য বছর এ সময় দামের চাপ কমে, এবার উল্টো। বাজার সামলানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।”
আরেক নারী ক্রেতা বলেন, “সবজি ছাড়া তো রান্নাই হয় না। কিন্তু প্রতিদিন দাম বাড়ছে। বাজেট মিলছে না।”
ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে উৎপাদন এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। নতুন করে চাষ হয়েছে, কিন্তু সেই সবজি বাজারে উঠতে আরও ৭–১০ দিন লাগবে। তখন দাম কিছুটা কমতে পারে।
এর বাইরে—দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১১০–১২০ টাকায় মিলছে। ডিম ও মুরগির বাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল—ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১২৫–১৩০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৬০–১৭০ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা, পরিবহন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং বাজার মনিটরিং জোরদার করা গেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।



























