এনবিআর সংস্কারে পৃথক দুটি বিভাগ স্থাপনকে স্বাগত জানাল সিপিডি
এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব প্রশাসন বিভাগ নামের পৃথক দুই বিভাগের যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে সেই পদক্ষেপটিকে স্বাগত জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
রবিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এমন মন্তব্য করেন।
জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে ওই মিডিয়া ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও গবেষক মুনতাসীর কামাল প্রমুখ।
এনবিআর এবং কর ব্যবস্থার সংস্কারে সুপারিশের বিষয়ে ফাহমিদা তার প্রস্তাবনায় বলেন, এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং নীতি, প্রশাসনিক ও শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে দুটি পৃথক বিভাগের প্রস্তাব করা হয়েছে যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব প্রশাসন বিভাগ। এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশকে ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফের শর্তগুলির মধ্যে একটি ছিল নীতি এবং বাস্তবায়ন পৃথক করা। এমন উদ্যোগ নীতি-স্বাধীনতা এবং নীতি-সারিবদ্ধতা উভয়কেই উন্নত করবে এবং কর ব্যবস্থার দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করবে। যেখানে বর্তমানে সিস্টেম রাজস্ব সংগ্রহের ওপর প্রধান ফোকাস দেওয়া হয়।
সিপিডি বলছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এনবিআর এবং কর ব্যবস্থার সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ রিসোর্স মোবিলাইজেশনে (ডিআরএম) বাংলাদেশের দুর্বল পারফরম্যান্স দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, যা বিশ্বের সর্বনিম্ন কর-জিডিপি অনুপাতের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। এই পটভূমিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের উদ্যোগে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে উপদেষ্টা কমিটি একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং তা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রস্তাব ছিল- রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন বিভাগ নামের দুইটি পৃথক বিভাগ করা। যেখানে ট্যারিফ যৌক্তিককরণ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য ও শিল্প নীতি এবং দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কৌশলের সাথে সিস্টেমটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নিশ্চিত করা কর নীতি বিভাগের কাজ হবে। নীতি বিভাগের কাজ এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে যাতে এটি শুধু রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
অন্যদিকে রাজস্ব প্রশাসন বিভাগের কাজ হবে কর নীতি দ্বারা প্রদত্ত নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ফাহমিদা বলেন, দেশের কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন ও আধুনিকীকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিআরএম ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করতে এবং একবিংশ শতাব্দীর চাহিদার সঙ্গে কর ব্যবস্থাকে উন্নতি করার জন্য দুই বিভাগেই উদ্যোগ প্রয়োজন। রাজস্ব সংগ্রহের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং কর ব্যবস্থার অটোমেশন, ডিজিটালাইজেশন এবং আধুনিকীকরণে এটা ইতিবাচক হিসেবে কাজ করবে।
সিপিডি’র প্রস্তাবে করদাতা-বান্ধব এবং কার্যকর করার জন্য নতুন আয়কর আইন ২০২৩ এর কিছু বিধানের বিষয়ে পরিবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- অহেতুক অডিট, টিডিএস রিপোর্ট এবং কোম্পানির সংজ্ঞায় পরিবর্তন প্রয়োজন। এছাড়াও কর আহরণের নতুন উপায়, বিশেষ করে ডিজিটাল অর্থনীতিতে কর আরোপের গুরুত্ব এবং সম্পদ কর এবং উত্তরাধিকার কর প্রবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।



























