নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি

নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে রাজধানী কাঠমান্ডুর প্রেসিডেন্ট ভবন ‘শীতল নিবাসে’ প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল তাকে শপথ পড়ান। নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, নতুন এই সরকারকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শপথের আগে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল ও সেনাবাহিনী প্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে বৈঠক হয়। সবার সম্মতিতেই সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শপথের পরপরই তিনি মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক করবেন। জানা গেছে, এই সরকার ছোট আকারের হবে এবং প্রথম বৈঠক থেকেই কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে সম্প্রতি নেপালে জেন-জেনারেশনের তরুণরা আন্দোলনে নামে। গত সোমবার পার্লামেন্টে প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এতে ক্ষোভ আরও বাড়ে।
পরদিন আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন এবং গা ঢাকা দেন। ওইদিন বিক্ষুব্ধ জনতা সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালান। এমনকি অর্থমন্ত্রীকে রাস্তায় মারধরের ঘটনাও ঘটে।
সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান তাকে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে।
তিনি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেছিলেন, ভারতের কাছ থেকে নেপাল বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা পেয়েছে।
নেপালের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কার্কি। তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়ায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে দেশটির তরুণ প্রজন্ম নতুন আশার সঞ্চার দেখছে।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট