দিল্লি বিস্ফোরণের পর ভারতজুড়ে সতর্কতা জারি
ভারতের রাজধানী দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ঘটনার পরই রাজধানীসহ সারা ভারতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী হাসপাতালে অন্তত ৩০ জন আহতের চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র সঞ্জয় ত্যাগী জানিয়েছেন, একটি হুন্ডাই আই-২০ গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। গাড়িটিতে তখন তিনজন আরোহী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিস্ফোরণটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে আশপাশের ভবনের জানালা পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। এক দোকান মালিক জানান, বিস্ফোরণের অভিঘাতে তিনি পরপর তিনবার মাটিতে পড়ে যান।
ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী সহ দেশ-বিদেশের বহু নেতা গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
দিল্লির পাশাপাশি কলকাতা, মুম্বাই সহ বড় শহরগুলোতে রাত থেকেই বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তায় চলছে তল্লাশি অভিযান। সতর্কতা জারি করা হয়েছে দেশের সব বিমানবন্দরেও।
দিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক সতর্কবার্তা জারি করে তাদের নাগরিকদের লাল কেল্লা ও চাঁদনি চক এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, তারা উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজার কিলোগ্রাম বিস্ফোরক, বিস্ফোরণ-সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ, চারটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় দুই চিকিৎসকসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা সন্ত্রাসী সংগঠন জয়েশ-এ-মুহাম্মদ ও আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ-এর সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি পুলিশের।
তবে পুলিশের ভাষ্যমতে, এই গ্রেফতারের সঙ্গে দিল্লির বিস্ফোরণের কোনো সরাসরি যোগ নেই।
অমিত শাহ জানান, ঘটনার তদন্তে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড ও ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি-এর বিশেষ দল নিয়োজিত হয়েছে। তার কথায়, “আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি। দ্রুত তদন্ত শেষ করে ফলাফল সাধারণ মানুষের সামনে আনা হবে।”
বর্তমানে ঘটনাস্থলে উত্তরপ্রদেশ সন্ত্রাস দমন স্কোয়াড, কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড মোতায়েন রয়েছে।
ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে আছে ছিন্নভিন্ন মরদেহ ও ধ্বংসাবশেষ। দিল্লির উপপ্রধান অগ্নিনির্বাপক কর্মকর্তা একেকে মালিক জানিয়েছেন, দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সন্ধ্যা ৭টা ২৯ মিনিটের দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিস্ফোরণের পর লাল কেল্লা ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকে পরিপূর্ণ এই জনপ্রিয় ঐতিহাসিক স্থাপনার কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।



























