বুধবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০১, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজায় গর্ভবতী নারী-শিশুসহ ৫৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

গাজায় গর্ভবতী নারী-শিশুসহ ৫৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা
সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় প্রতিদিনই ঝরছে রক্ত। সর্বশেষ সোমবারের বোমাবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৯ ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এক গর্ভবতী নারী ও তার অনাগত শিশু।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, গাজা সিটিতে শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে ব্যাপক অভিযান চালায় ইসরায়েলি সেনারা। সেখানে গর্ভবতী নারী ও তার অনাগত শিশুর মৃত্যু হয়। একই হামলায় আরও এক শিশু নিহত হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফা ও আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।

শুধু তাই নয়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের জায়তুন ও সাবরা এলাকায়ও ভয়াবহ বোমা বর্ষণ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারান। গত এক মাস ধরে চলা অভিযানে এক হাজারেরও বেশি ভবন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে সেনারা।

দিনের শুরুতেই নাসের স্ট্রিটের ব্যস্ত বাজারে হঠাৎ বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। আল জাজিরার সাংবাদিক মোয়াথ আল-খালুত জানান, “মানুষ জানে না কোথায় যাবে, কোথায় আশ্রয় নেবে। শহরের প্রতিটি কোণায়ই হামলা চলছে।”

এছাড়া দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-মাজরা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদেরও টার্গেট করা হয়। আল-আকসা মার্টিয়ার্স হাসপাতাল পরে আনাস সাঈদ আবু মুগসিব নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

যুদ্ধের পাশাপাশি গাজায় এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে দুর্ভিক্ষ। জাতিসংঘ একে আখ্যা দিয়েছে ‘মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’। সোমবার খাদ্যসংকটে আরও তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে অনাহারে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে গাজায় যে মানবিক সহায়তা ঢুকছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ।

যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত আগস্টে জাতিসংঘ সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়ন সংস্থা (আইপিসি)-র দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করে একে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে দাবি করেছিলেন।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সোমবার এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “ইসরায়েলের সহায়তা আটকে রাখা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, একবিংশ শতাব্দীতে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। আরও মৃত্যু ঠেকাতে এখনই জরুরি মানবিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।” তিনি অবিলম্বে গাজায় আটকে থাকা খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান।

সম্পর্কিত বিষয়: