শেখ হাসিনার মামলার রায়, ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পালিয়ে ভারতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক প্রস্তুতি দেখা যায়।
সুপ্রিম কোর্ট এবং ট্রাইব্যুনালের চারপাশ ঘিরে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। মাজার গেটের সামনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের ভেতর ও বাইরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তাবাহিনী।
চব্বিশে জুলাইয়ের গণহত্যার দায়ে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হবে। ঐতিহাসিক এ রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে টেলিভিশন চ্যানেলসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায়। সাধারণ মানুষও বিচারপ্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।
গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যান্যরা। ২৩ অক্টোবর সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। পরে চিফ প্রসিকিউটর ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন পাল্টা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ; তবে তার আইনজীবী খালাসের আবেদন করেছেন।
মামলার মোট ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। চলতি বছরের ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ৮ অক্টোবর। এরপর ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রের মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৭। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা।
গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেওয়া হয়।



























