বদরুদ্দীন উমর আর নেই

প্রবীণ রাজনীতিক, লেখক, গবেষক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর আর নেই। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আজ অসুস্থ অবস্থায় বাসা থেকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে আনার পর সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।”
বদরুদ্দীন উমরের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার এক উচ্চবিত্ত পরিবারে। তার পিতা ছিলেন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ আবুল হাশিম, যিনি অবিভক্ত বাংলায় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস নেতা শরৎ বসুর সঙ্গে মিলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই প্রক্রিয়ায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, কিরণশঙ্কর রায় প্রমুখও যুক্ত ছিলেন। তার পিতামহ আবুল কাশেম ছিলেন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ও বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য। বর্ধমানের এই পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের বাড়িতে উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদরা আসতেন। এমনই রাজনৈতিক পরিবেশে বদরুদ্দীন উমরের বেড়ে ওঠা।
সমাজ বিপ্লবের স্বপ্ন বুকে নিয়ে ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে নিয়োজিত হন বদরুদ্দীন উমর। ১৯৬৯ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টিতে (মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ) যোগ দেন। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত পার্টির মুখপত্র ‘গণশক্তি’ সম্পাদনা করেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পার্টির নীতি-লক্ষ্যের সঙ্গে অসন্তুষ্ট হয়ে তিনি পার্টিতে পরপর দুটি দলিল প্রদান করেন। ডিসেম্বরে মতাদর্শিক কারণে ইপিসিপি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি কমিউনিস্ট ভাবাদর্শের প্রসার ও নেতৃত্ব গড়ে তোলার কাজে নিবেদিত থাকেন। তিনি বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোট প্রভৃতি সংগঠনের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন।