বৃহস্পতিবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

পদত্যাগের পরও সরকারি বাসভবনে অবস্থান দুই উপদেষ্টার

পদত্যাগের পরও সরকারি বাসভবনে অবস্থান দুই উপদেষ্টার
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে এক সপ্তাহ আগে পদত্যাগ করলেও এখনো সরকারি বাসভবন ছাড়েননি দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। কবে তাঁরা বাসভবন ছাড়বেন-এ বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছেও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতেও রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার পর্যন্ত পদত্যাগী এই দুই উপদেষ্টার কেউই সরকারি বাসভবন ত্যাগ করেননি। এ বিষয়ে তাঁদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করা হয়নি। এমনকি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে গণমাধ্যম এর পক্ষ থেকে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি। প্রতিবেদকের পরিচয় উল্লেখ করে পাঠানো এসএমএসেরও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

জনপ্রতিনিধিরা পদত্যাগের পর কত দিনের মধ্যে সরকারি বাসভবন ছাড়বেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি বাসভবন, গাড়ি কিংবা অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে নীতিমালায় বলা আছে, চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তাঁরা সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত সরকারি বাসভবনে থাকতে পারবেন। সন্তানরা যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত থাকে, সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চার মাস সময় পাওয়া যায়।

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। প্রধান উপদেষ্টা তখন তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। সে সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এই পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে।

এর পরদিন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের বিদায় জানানো হয়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র কার্যকর হয়।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন থেকেই উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম গত বছরের ২৮ আগস্ট নিয়োগ পেয়ে প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরে ১০ নভেম্বর তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। শুরুতে কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব না পেলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করলে তাঁকে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে আসিফ মাহমুদ প্রায় ১৫ মাস এবং মাহফুজ আলম প্রায় ১৩ মাস উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ঘোষণা আসে আসিফ মাহমুদের মাধ্যমে। ঘোষিত কর্মসূচি এক দিন এগিয়ে এনে ৫ আগস্ট বাস্তবায়ন করা হয়, যা তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ত্বরান্বিত করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তাঁর ভূমিকা ব্যাপকভাবে আলোচিত ও স্মরণীয় হয়ে আছে।

অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রথমবার অংশ নিতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সফরসঙ্গী হিসেবে মাহফুজ আলমকে সঙ্গে নেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে বিশ্বমঞ্চে মাহফুজ আলমকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ায় বিষয়টি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

সূত্র: কালের কন্ঠ

জনপ্রিয়