৪৭তম বিসিএসের প্রিলি আজ, আবেদনকারী ৩ লাখ ৭৪ হাজারের বেশি

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন প্রায় ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৭ জন চাকরিপ্রার্থী। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তত্ত্বাবধানে এই পরীক্ষা দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের মোট ২৫৬টি কেন্দ্রে একযোগে নেওয়া হচ্ছে।
পিএসসি জানিয়েছে, ৪৭তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ৩ হাজার ৬৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৮৭টি পদ ক্যাডার এবং ২০১টি পদ নন-ক্যাডার। এবারের বিসিএসে কিছু নতুন ক্যাডার পদও যুক্ত হয়েছে। বিশালসংখ্যক প্রার্থীকে একযোগে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাতে কমিশন প্রস্তুতি নিয়েছে কয়েক ধাপে। আগেই জানানো হয়েছে, পরীক্ষার দিনে নির্দিষ্ট সময় মেনে পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করতে হবে এবং মানতে হবে বেশ কিছু কঠোর নিয়ম।
পিএসসির দেওয়া সময়সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীদের সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে নিজ নিজ কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে। এর পর গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং কেউ হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। আগে থেকেই পরীক্ষার্থীদের মুঠোফোনে এসএমএস পাঠিয়ে কেন্দ্রের নাম ও কক্ষ নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময়মতো কেন্দ্রে উপস্থিত না হলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছে কমিশন।
পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল ৯টা ৩০ থেকে ৯টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র বিতরণ করা হবে। এরপর সকাল ১০টায় বিতরণ করা হবে প্রশ্নপত্র। প্রতিটি উত্তরপত্রে চারটি সেট থাকবে, সেট ১, ২, ৩ ও ৪। প্রশ্ন হবে মোট ২০০টি এবং প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। তবে ভুল উত্তরের জন্য থাকবে নেতিবাচক মূল্যায়ন। একটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কেটে নেওয়া হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পিএসসি। পরীক্ষার্থীরা সঙ্গে করে কোনো বই, নোট, কাগজপত্র, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মতো দেখতে কিছু, গহনা বা ব্যাগ আনতে পারবেন না। এসব সামগ্রী নিয়ে কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করলে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। এমনকি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারবেন।
এছাড়াও পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীদের কানের ওপর কিছু রাখা যাবে না। কানে কোনো ধরনের হিয়ারিং এইড থাকলে, তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনসহ কমিশনের অনুমোদন লাগবে। এই বিধিনিষেধ মূলত প্রযুক্তিনির্ভর জালিয়াতি ঠেকানোর জন্যই নেওয়া হয়েছে বলে জানায় কমিশন।
প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা আগে থেকে আবেদন করেছেন, তাদের জন্য পিএসসির মনোনীত শ্রুতলেখক সরবরাহ করা হয়েছে। কমিশনের বাইরে অন্য কেউ শ্রুতলেখক হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা প্রতি ঘণ্টার জন্য অতিরিক্ত ১০ মিনিট এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধীরা প্রতি ঘণ্টার জন্য অতিরিক্ত ৫ মিনিট সময় পাবেন।
সরকারি চাকরির সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাকে ঘিরে দেশজুড়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে। কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। অভিভাবকরাও সন্তানদের নিয়ে কেন্দ্রে আসছেন সময়মতো পৌঁছাতে সহায়তা করতে।
পিএসসি থেকে জানানো হয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস বা কোনো ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে কেন্দ্রসমূহে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।