মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২

সংবাদ পরিক্রমা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:২১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হতে চাই না : প্রধান উপদেষ্টা

আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হতে চাই না : প্রধান উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ মানে বৈষম্যহীন সমাজ, যেখানে সবাই সমান মর্যাদায় দাঁড়াবে। তিনি বলেন, “আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হতে চাই না। আমাদের তরুণরা জেগে উঠেছে, মানুষ জেগে উঠেছে। তারা রক্ত দিয়েছে, আত্মত্যাগ করেছে—তার বিনিময়ে চাই বৈষম্যহীন, সমান অধিকারের বাংলাদেশ।”

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান জাতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। “যেই ঘরে জন্মগ্রহণ করুক না কেন, ছেলে-মেয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। তারা কেউ ভয়ে পালিয়ে থাকার জন্য জন্মায়নি। তারা স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠবে, দেশকে গড়ে তুলবে, পৃথিবীকে বদলে দেবে।”

তিনি বলেন, “আমরা এমন রাষ্ট্র গড়তে চাই, যেটিকে একদিন পৃথিবী অনুসরণ করবে। এজন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে সমৃদ্ধির পথে এগোবে বাংলাদেশ।”

দুর্গাপূজার প্রতীকের উদাহরণ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “লক্ষ্মীর ধন, সরস্বতীর জ্ঞান, কার্তিকের বীরত্ব, গণেশের সাফল্য আর দুর্গার শক্তি—সবকিছু মিলিত হয়ে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে। আমরাও যদি জ্ঞান, শক্তি ও সম্পদ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই, কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। বিভক্ত হলে ব্যর্থ হব।”

জাতিকে তিনি পরিবারের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “পরিবারে মতভেদ থাকলেও পরিবার ভাঙে না। জাতিও যেন সেই অটুট পরিবারের মতো দাঁড়ায়।”

ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, রাষ্ট্রের কাছে প্রত্যেক মানুষ কেবল একজন নাগরিক। “ধনী-গরিব, যে ধর্মে বা মতবাদে বিশ্বাস করুক না কেন—সংবিধানে তার অধিকার লিপিবদ্ধ আছে। সরকার বা রাষ্ট্র কাউকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা রাখে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা বারবার লাঞ্ছিত হই, বৈষম্যের শিকার হই কারণ নাগরিক অধিকারের প্রতি আমাদের মনোযোগ কমে গেছে। এখন সময় এসেছে সবাই মিলে এই অধিকারকে সামনে আনার। নতুন বাংলাদেশ মানে সবার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা।”

ধর্ম পালনের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীতে ধর্ম পালন করতে চাই না। আমরা চাই বিশ্বাস, স্বাধীনতা আর নিরাপত্তার পরিবেশে যার যার ধর্ম পালন করতে।”