হাদির মৃত্যুতে এনসিপির শোক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম অগ্রসেনানী, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের শক্তিশালী সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদী আর নেই। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ওসমান হাদীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাতে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীনের পাঠানো এক বিশেষ শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
এনসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, ওসমান হাদী ছিলেন দেশপ্রেমিক ও আপোষহীন এক কণ্ঠস্বর। তার অকাল মৃত্যুতে দেশ একজন সম্ভাবনাময় তরুণ নেতাকে হারালো। শোকবার্তায় দলের পক্ষ থেকে মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত ১২ ডিসেম্বর। ওই দিন মতিঝিল এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে রিকশাযোগে ফেরার পথে বক্স কালভার্ট এলাকায় তিনি সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণের শিকার হন। গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক অবস্থার গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। তবে ঘাতকের বুলেটের ক্ষত ও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি পরলোকগমন করেন।
ওসমান হাদীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও শাহবাগে ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জড়ো হতে শুরু করেছেন। তারা এই হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং স্বাধীন কণ্ঠকে স্তব্ধ করার অপচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, অতিদ্রুত ঘাতকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে, অন্যথায় দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের সহযোদ্ধারা।
ওসমান হাদীর মৃত্যু কেবল একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের জন্য এক বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।



























