নোবিপ্রবিতে শীঘ্রই হচ্ছে ছাত্রদলের কমিটি, আলোচনায় জুলাই যোদ্ধা হাসিব

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার পর থেকে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সর্বশেষ ২০২১ সালে ১৭ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলেও ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের দমন পীড়নের মুখে অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়ে সে কমিটি। ৫ আগষ্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পরর্বতী সময়ে নতুন কমিটির দাবি উঠে নোবিপ্রবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে। নতুন কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে তৈরি হয় জল্পনা কল্পনা। কে হচ্ছেন সভাপতি, কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক, তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে তৈরি হয়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা।
জানা গেছে, নোবিপ্রবির ছাত্রদলের আসন্ন কমিটিতে আলোচনায় আহত জুলাই যোদ্ধাসহ একাধিক প্রার্থী। এই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে সবচেয়ে বেশি শুনা যাচ্ছে জাহিদ হাসানের নাম। ৫ আগষ্ট পরবর্তী ক্যাম্পাসে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ার পাশাপাশি রাজপথেও ছিলের সক্রীয়। ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করতেও রাখছেন ভুমিকা। জাহিদ ছাড়াও সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন শাহরাজ উদ্দিন জিহান, সাব্বির হাসান।
নতুন কমিটির সবচেয়ে আলোচিত মুখ জুলাই যোদ্ধা ও রাজপথের ত্যাগী ছাত্রদল নেতা হাসিবুল হোসেন।
তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ এন্ড মেরিন স্যাইন্স বিভাগে ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে শুনা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি তার নাম। যিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ও সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সব সময় ছিলেন বিএনপির সকল কর্মসূচীতে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তার ভূমিকা কারো অজানা নয়। নোয়াখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে ছিলেন সামনের সারিতে, দিয়েছেন রাজপথের আন্দোলনের নেতৃত্ব।
৫ আগষ্ট নোবিপ্রোবি ক্যাম্পাস থেকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলায় গুরুত্বর আহত তিনি। ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। তবুও দমে যাননি হাসিবুল হোসেন। সুস্থ হয়ে আবারও ফিরেন রাজপথে। এবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির পদ পদবী ও সুবিধার গ্রহণের সুযোগ থাকলেও হাসিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে না গিয়ে ফিরে যান ছাত্রদলের কার্যক্রমে। নেমে পড়েন নোবিপ্রবি ছাত্রদলকে সুসংগঠিক করার কাজে। সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌছে দিতে থাকেন ছাত্রদলের রাজনীতি। রাজপথে হাসিবের এমন সাহসী ভূমিকার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন তিনি। তাই সাধারণ সম্পাদক পথে ঘুরে ফিরেই আসছে এই জুলাই যোদ্ধার নাম।
নতুন কমিটির বিষয়ে কথা হয় ছাত্রদল নেতা হাসিবুল হোসেনের সাথে। বলেন, কখনো সরকার কিংবা পুলিশের রক্তচক্ষুকে ভয় করিনি। ছাত্রদলের পতাকা বুকে ধারণ করে গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে ছিলাম রাজপথে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে হাসিনা বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল, রোড মার্চ, পদযাত্রা, একতরফা ভোটের বিরোধী আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ’সহ দলের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছি। হরতাল অবরোধ পালন করতে গিয়ে জেলা শহর মাইজদীতে একাধিকবার পুলিশি হয়রানির শিকার হয়েছি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শুরু থেকে হাসিনার পতনের চূড়ান্ত মুহুর্ত পর্যন্ত আন্দোলনে ছিলাম, নেতৃত্ব দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধীর কমিটিতে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও যাইনি। প্রাণের সংগঠনকে ভালোবেসে ফিরে এসেছে। আমি আশাবাদী, আমার ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির অভিভাবকরা আমাদের এই ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করবেন।
আসন্ন কমিটিতে হাসিবুল ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে আছেন মোহাম্মদ সায়েম, মো. আশিকুর রহমান জীবন, মোহাম্মদ আলী।
নোবিপ্রবি'র সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের চাওয়া, দলের দুঃসময়ে পরীক্ষিত ত্যাগীরা সুযোগ পাবে এবং পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষার্থীবান্ধব নেতারা উঠে আসবে আসন্ন কমিটিতে।