সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

মো. আলী

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২০ জুলাই ২০২৫

ভুয়া সার্টিফিকেটে স্কুল সভাপতির পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

ভুয়া সার্টিফিকেটে স্কুল সভাপতির পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
ভুয়া সার্টিফিকেট ও প্রতারক বাসার

ভুয়া ডিগ্রি সার্টিফিকেট জমা দিয়ে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির পদ দখল করেছেন এক ব্যক্তি—এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তর উত্তমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

 

অভিযুক্ত মো. আবুল বাসার, যিনি মেগা ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সির মালিক, তিনি একটি অবৈধ বিশ্ববিদ্যালয় ইবাইস ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট দাখিল করে বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটিতে সভাপতির পদের জন্য ডিগ্রি পাস বাধ্যতামূলক হলেও মো. আবুল বাসার ভূয়া সার্টিফিকেট জমা দিয়ে এই পদ লাভ করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একাধিকবার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা—এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই অগ্রহণযোগ্য ডিগ্রি সার্টিফিকেট দিয়েই আবুল বাসার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এর পেছনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কিছু অসাধু ব্যক্তির মদদ রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, মো. আবুল বাসার আগে থেকেই বিতর্কিত। তার মালিকানাধীন ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে টিকিট কারসাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ আয় রয়েছে। এমনকি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার প্রতিষ্ঠান মেগা ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।

এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাত্রীদের নাম ছাড়াই গ্রুপ বুকিং করে টিকিট মজুদ রাখতেন আবুল বাসার। পরে সেগুলো হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্মে দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামে বিক্রি করা হতো।

স্থানীয়দের দাবি, অবৈধ টাকায় রাজধানীতে জমি, ফ্ল্যাট ও গাড়ি কিনেছেন তিনি এবং তা ব্যবহার করে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে প্রভাব বিস্তার করছেন।

এ বিষয়ে উত্তর উত্তমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “আবুল বাসারের আবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মাধ্যমে যাচাই করে বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে। যদি কোনো অনিয়ম থাকে, তবে সেটি প্রশাসনের দেখার বিষয়।”

অভিযুক্ত মো. আবুল বাসারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে, স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মো. আবুল বাসারকে বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।