নিয়তির অন্ধকারে নেতৃত্বের সন্ধান- ইডিপাস নিয়ে হাবিব মাসুদের ভাবনা
প্রাচীন গ্রিক নাট্যকার সফোক্লিসের অমর সৃষ্টি ‘ইডিপাস’ আবারও মঞ্চে আসছে দৃশ্যকাব্য থিয়েটারের নতুন প্রযোজনায়। নাটকটির নির্দেশনা দিচ্ছেন হাবিব মাসুদ। তাঁর ভাষায়, বোধকরি, সময় আমাদের চালিত করে। ইডিপাস মঞ্চে আনবার ক্ষেত্রেও বর্তমান সময়টি আমাকে ভাবিয়েছে।
বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গভীর এক শূন্যতা অনুভব করেন এই নাট্যনির্দেশক। তিনি বলেন, মনে হয়েছে, আমরা যেন অনন্ত রাত্রির অন্ধকারে নিমজ্জিত। বারবার প্রশ্ন জেগেছে- আমাদের কি কোনো নেতৃত্ব নেই? জাতি হিসেবে প্রতারিত হওয়াই কি আমাদের নিয়তি? এই নিয়তিকে কি আমরা কখনও অতিক্রম করতে পারব?
হাবিব মাসুদের কাছে ইডিপাস কেবল প্রাচীন থিবির রাজা ইডিপাসের গল্প নয়; এটি নেতৃত্বহীনতা ও নিয়তির কাছে পরাজিত এক জনপদের রূপক। তাঁর মতে, নিয়তিকে অতিক্রমের আর্তনাদ ইডিপাসকে মহান করে তোলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে সেই নিয়তির শিকার হয়। এই চিরন্তন মানব-দ্বন্দ্ব আজও আমাদের সমাজে প্রাসঙ্গিক।
নাটকের নির্মাণে মূল পাঠে বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে চরিত্র বিন্যাস ও কোরাস ব্যবহারে রয়েছে কিছু নতুন পরীক্ষণ। নির্দেশক বলেন, ক্লাসিকের শক্তি সর্বকালের, সর্বমানবের। তাই মূল পাঠ অক্ষুণ্ণ রেখে চরিত্র ও কোরাসে নতুন ব্যাখ্যার প্রয়াস নিয়েছি। আশা করি, দৃশ্যকাব্যের ইডিপাস দর্শককে প্রাচীন থিবির রাজপ্রাসাদে কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিয়ে যাবে।
ইডিপাস–এর বাংলা অনুবাদ করেছেন সৈয়দ আলী আহসান। ইডিপাস চরিত্রে অভিনয় করছেন এইচ এম মোতালেব। আরও অভিনয় করছেন ঝুমু মজুমদার, আহাদ বিন মুর্তজা, নাইমুল ইসলাম সিয়াম, আশিকুল ইসলাম, উৎপল চন্দ্র বর্মনসহ অনেকে। আলো, সংগীত ও মঞ্চসজ্জায় থাকছে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ।
নাটকটির প্রথম প্রদর্শনী হবে ৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায়, এরপর ৭ নভেম্বর বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট ও সন্ধ্যা ৭টায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে।
মানব নিয়তি, নেতৃত্ব ও আত্ম-চেতনার প্রশ্নে আলো ফেলবে দৃশ্যকাব্যের ইডিপাস-এমনটাই বিশ্বাস নির্দেশকের।



























