মানসিক বিষণ্ণতার ভয়াবহ আমি বুঝি : শুভশ্রী

নিরব হাসির আড়ালেও যে লুকিয়ে থাকতে পারে গভীর লড়াই—সেই কথাই নতুন করে সামনে আনলেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী। টালিউডের ‘লেডি সুপারস্টার’ হিসেবে দর্শকের ভালোবাসা, সফল ক্যারিয়ার, পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে সুখী দাম্পত্য ও দুই সন্তানের মা—সবকিছু মিলিয়ে আপাতদৃষ্টিতে নিখুঁত এক জীবনের অধিকারী হলেও, একসময় মানসিক অবসাদের কঠিন সময় পার করতে হয়েছে তাকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই অদৃশ্য যন্ত্রণার গল্প এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নিজের উপলব্ধির কথা খোলাখুলি ভাগ করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী সম্প্রতি নিজের জীবনের এক সংবেদনশীল অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। জীবনে বিপুল সাফল্য, সুখী সংসার ও দুই সন্তানের মা হওয়া সত্ত্বেও তিনিও একসময় বিষণ্ণতায় ভুগেছেন—এ কথা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি। এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই মানসিক সমস্যার ভয়াবহতা তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন।

শুভশ্রী বলেন, ‘আমিও সেই সময় ডিপ্রেশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। তবে সেক্ষেত্রে আমার কোনো বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হয়নি ঠিকই। কিন্তু আমি বুঝেছিলাম ডিপ্রেশন ঠিক কী হয়। আগে হয়তো বুঝতাম না। কিন্তু এটা যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, সেটা আমি এখন বুঝি।’

তার মতে, মানসিক অসুস্থতাকে কখনোই হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। শারীরিক রোগের মতোই এটি একটি বাস্তব সমস্যা, যার জন্য প্রয়োজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাউন্সেলিং একটা মেডিকেল পার্ট। আমি সেটাকে এড়িয়ে যেতে চাই না। কারণ আজ থেকে ২০ বছর আগে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এতটা সচেতন আমরা ছিলাম না। যদি মানসিক সমস্যা দেখা দেয় বা কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, বা ওষুধ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে—সেটার মধ্যে কোনো খারাপ বিষয় নেই। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। কারণ শারীরিক অসুখের মতো এটাও কিন্তু অসুখ।’

ব্যক্তিগত জীবনে এমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও কর্মজীবনে এখন দারুণ ব্যস্ত শুভশ্রী গাঙ্গুলী। চলতি বছরে তার অভিনীত ছবি ‘গৃহপ্রবেশ’ মুক্তি পেয়ে দর্শকমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। পাশাপাশি প্রায় এক দশক ধরে আটকে থাকা তার আলোচিত ছবি ‘ধূমকেতু’-ও এ বছর মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত সিরিজ ‘অনুসন্ধান’, যা নিয়েও দর্শকদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে শুভশ্রী শুধু একজন সফল অভিনেত্রী হিসেবেই নয়, বরং সচেতন নাগরিক হিসেবেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।